বিদেশি এনজিও কর্মকর্তা গায়ত্রী এবং কিলিং মিশনের প্রধান মুসাতেই ঘুরপাক খাচ্ছে মিতু হত্যারহস্য। গায়ত্রী কর্মস্থল সুইজারল্যান্ডে রয়েছেন বলে পিবিআই নিশ্চিত হলেও মুসার কোনো হদিস নেই। এ অবস্থায় তাদের গ্রেফতার কিংবা জিজ্ঞাসাবাদ করা না গেলে মামলার প্রমাণ দুরূহ বলে মনে করেন সরকার নিয়োজিত কৌঁসুলি।
প্রধান আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতার চরম নাটকীয়তার পরও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেয়ায় বহুল আলোচিত মিতু হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে জটিলতায় তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। তদন্তে উঠে এসেছে বাবুল আকতারের নির্দেশে বিশ্বস্ত সোর্স মুসা এই কিলিং মিশন সম্পন্ন করেছে। কিন্তু ঘটনার ৫ বছরেও মুসার কোনো সন্ধান পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এক্ষেত্রে ঘটনার পরপরই মুসাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে বলে তার স্ত্রী দাবি করলেও ভিন্ন কথা বলছেন পিবিআইয়ের ডিআইজি- প্রধান প্রকৌশলী বনজ কুমার মজুমদার।
মুসার স্ত্রী পান্না আকতার সময় নিউজকে বলেন, আমার স্বামী ২০১৬ সালের ২২ জুন গ্রেফতার হয় আমার সামনে। নিজামউদ্দিন আমার স্বামীকে হাতে হ্যান্ডকাপ (হাতকড়া) পরিয়েছিল।
প্রকৌশলী বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মুসাকে খোঁজার জন্য লোক নিয়োগ করা হয়েছে যে, আসলে কি হয়েছে। তিনি এখন বাংলাদেশে নেই।
এদিকে নিহত মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে অভিযোগ করেছেন, ভারতীয় বংশোদ্ভুত হল্যান্ডের নাগরিক গায়ত্রী অমরাসিংয়ের সাথে বাবুল আকতারের পরকীয়া প্রেম ছিল।
তার বেশকিছু তথ্য প্রমাণ এজাহারে তুলে ধরে উল্লেখ করা হয়েছে, সেই পরকীয়া প্রেমের জের ধরেই বাবুল আকতার তার স্ত্রী মিতুকে নির্যাতন করতো। কিন্তু পিবিআই গায়ত্রীর অবস্থান সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বলে নিশ্চিত হলেও নানা জটিলতায় সহজে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনতে পারছে না।
চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা বলেন, সরাসরি তথ্য যদি আমরা পাই যে সে কোনোভাবে এটিকে সহযোগিতা করেছে বা তার এখানে যে কথা ছিল সেক্ষেত্রে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, তখন প্রসেস অনুসারে এগোনো হবে।
তবে গুরুত্বপূর্ণ এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গায়ত্রী এবং মুসাকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলছেন সরকার নিয়োজিত কৌঁসুলি।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন বলেন, প্রথম কাজ হচ্ছে তাদের দুজনকে খুঁজে বের করে মামলায় সংযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিতে হবে।
২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে নগরীর জিইসি মোড়ে দুর্বৃত্তদের গুলি এবং ছুরিকাঘাতে খুন হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ঘটনাস্থলের আশপাশের ফুটেজ থেকে চিহ্নিত করা হয় কিলিং স্কোয়াডের সদস্যদের। এর মধ্যে মূল ভূমিকা পালনকারী কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা ছিলেন বাবুল আকতারের সোর্স।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন