বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সৌদি আরবগামী তিনটি গন্তব্যে চলাচলকারী ফ্লাইটের যাত্রীদের ওপর শর্তারোপ করা হয়েছে। শর্তের মধ্যে প্রত্যেক যাত্রীকে সৌদি আরব যাওয়ার পর নিজ খরচে সাত দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
আগামী ২০ মে (স্থানীয় সময়) রাত ১২টার পর থেকে এ নিয়ম চালু হতে যাচ্ছে বলে ই-মেইল বার্তায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিমানের বলাকা ভবনের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, দুই দিন আগে সৌদি আরবের সিভিল এভিয়েশন অথরিটি থেকে ই- মেইল বার্তা পাঠিয়ে জানানো হয়েছে যে, আগামী ২০ মে রাত ১২টার পর বিমানের ফ্লাইটে যেসব যাত্রী সৌদি আরব আসবেন, তাদের প্রত্যেককেই সাত দিনের জন্য নিজ খরচে হোটেলে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। যারা এ নিয়ম মানবেন না তাদের বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠানো হবে বলে ওই শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকারের সাথে এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একাধিক কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে বলেন, সৌদি সিভিল এভিয়েশন থেকে দুই দিন আগে যাত্রীদের সাত দিনের কোয়ারেন্টিন মানার একটি শর্তারোপের ই-মেইল এসেছে। এটি পাওয়ার পর থেকেই কর্তৃপক্ষ কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েছে। কারণ এমন কঠোর শর্তারোপের কারণে বিমানের ফ্লাইটে সেই পরিমাণ যাত্রী পাওয়া নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে তাদের মতে, সাত দিনের কোয়ারেন্টিনে একজন যাত্রীর কমপক্ষে ২০০ সৌদি রিয়াল খরচ হওয়ার কথা। সেই হিসেবে টিকিটের টাকার বাইরে একজন যাত্রীর কোয়ারেন্টিনে থাকা বাবদ অতিরিক্ত আরো প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে যাবে। এখন পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে বিমান কর্তৃপক্ষ এই রুটে শর্ত মেনে ফ্লাইট চালাবেন কি চালাবেন না। সৌদি আরবের জেদ্দা, রিয়াদ ও দাম্মামে প্রতিদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তিনটি করে ফ্লাইট চলাচল করছে। হিসাব অনুযায়ী একটি ফ্লাইটে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ যাত্রী থাকতে হয়। নতুবা লোকসান গুনতে হবে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষকে।
উল্লেখ্য করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এরই মধ্যে দুবাই, আবুধাবী, মাস্কাট, কুয়েত, বাহরাইন, নেপাল ও ভারতের কলকাতা ও দিল্লি রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। একমাত্র শ্রমবান্ধব দেশ হিসাবে সৌদি আরব খোলা ছিল। এই দেশটিতে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী পাড়ি দিচ্ছিলেন। সেখান থেকেও যাত্রীদের জন্য শর্তারোপ জুড়ে দেয়ায় এয়ারলাইন্স ব্যবসায় দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাবে বলে মনে করছেন এভিয়েশন ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন