প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনও দেশের উন্নয়নে দৈনিক ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন। তিনি যদি এ বয়সে এসে দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে এখনও দৈনিক ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করতে পারেন, তাহলে একজন জেলা প্রশাসক হিসেবে আমার দৈনিক ২২ ঘণ্টা কাজ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বরিশালের নবাগত জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার।
সোমবার দুপুরে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রশাসন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বরিশালের নবাগত জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি যেটুকু জেনেছি, তিনি একজন পরিশ্রমী নারী হিসেবে প্রতিনিয়ত দেশ ও জাতির ভাগ্য উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নিয়মিত তার দপ্তরের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরেও তিনি সঠিক সময় দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। পাশাপাশি গভীর রাতে তাহাজ্জত নামাজ পড়েন। এ সময় নামাজ শেষে তিনি অজিফা ও কোরআন শরিফ পড়েন।
জেলা প্রশাসক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মাটি ও মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে পাকিস্তানিদের শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি বলেই আজ আমি জেলা প্রশাসক হতে পেরেছি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি এ দেশকে স্বাধীনতা এনে না দিতেন, তা হলে আজ আমি কেন, কেউই এ দেশের বড় কোনো পদে বসতে পারতেন না।
তিনি বলেন, যার জন্য আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেলাম, বড় বড় পদ পেলাম, আজ আমরা অকৃতজ্ঞ বলেই সেই মহান নেতাকে অনেকেই মনে রাখি না। তিনি সেই জাতির পিতাকে সম্মান ও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করার পাশাপাশি সকলকে তার নীতি আদর্শ মেনে চলার আহবান জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন প্রতিনিধি হিসেবে বরিশালের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে এসেছেন। এক্ষেত্রে তিনি বানারীপাড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীলের দাবি অনুযায়ী এ উপজেলায় এখনও যেসব উন্নয়ন কাজ মুখথুবড়ে পড়ে আছে, পর্যায়ক্রমে সেগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
এ সময় পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীল তার বক্তৃতায় জেলা প্রশাসকের কাছে বানারীপাড়া পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করার সার্বিক সহযোগিতা চাওয়ার পাশাপাশি পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটি মডেল মসজিদ, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও একটি স্টেডিয়াম নির্মাণের দাবি জানান। এছাড়া উপজেলায় এখনও যে সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মুখথুবড়ে পড়ে আছে, সেসব উন্নয়নকাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান।
তার এসব দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন আস্থাভাজন হিসেবে বরিশালের নবাগত জেলা প্রশাসক বানারীপাড়ার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
এ সময় সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লা বলেন, ক্ষমতার ১২ বছরে এখনও এলাকায় কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন কাজ দেখছি না। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত এলাকায় যেসব উন্নয়নকাজ হয়েছে তা নিম্নমানের হওয়ার কারণে অনেকাংশেই বিতর্কিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, অনেক স্থানে নদীর পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে তিনি বিভিন্ন এলাকার নদীগুলোতে ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করার আহ্বান জানান।
প্রেস ক্লাব সভাপতি রাহাদ সুমনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন- উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ডা. খোরশেদ আলম সেলিম, চাখার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.খিজির সরদার প্রমুখ।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে স্থানীয় এমপি মো. শাহে আলম ও স্থানীয় ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন