কুয়েতের ফৌজদারি আদালতে চারবছরের দণ্ড পাওয়ায় শহিদুল ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্য পদ থাকবে না বলে মনে করছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।
তবে ফৌজদারি আদালতে দণ্ডিত হলেও যেহেতু বিদেশে সাজাপ্রাপ্ত তাই এই বিষয়ে সাংবিধানিক ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশিদ আলম।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম পাপুলকে মানব ও মুদ্রা পাচারের অভিযোগে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে কুয়েতের একটি ফৌজদারি আদালত। তারসঙ্গে দণ্ডিত হয়েছেন দেশটির আরও দুই শীর্ষ কর্মকর্তা। একইসঙ্গে তাদের তিনজনকে ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো আইনপ্রণেতা নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত তিনি আর সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হন না।
কুয়েতের আদালতে এমপি পাপুলের সাজার রায় হওয়ার পর এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকাটাইমসকে সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, ‘বিদেশে থাকার পর তিনি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বিচারপ্রক্রিয়া শেষে তার সাজা হয়েছে। এই অবস্থায় তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে আবার দেশে এসে সংসদে যোগ দেবেন এটা অসম্ভব। এই অবস্থায় তার সংসদ সদস্য পদে থাকার কোনো সুযোগ নেই।’
নির্দোষ প্রমাণ হয়ে আসতে পারলে এমপি পাপুলের পদে থাকার সুযোগ পাবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশের আইন অনুযায়ী তো দুই বছরের সাজা হলে পরে যদি তিনি নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেন তখন একটা বিষয়। কিন্তু তার তো সাজা হয়েছে চার বছর। সেখান থেকে তিনি ফিরে আসতে পারবেন? এটা অসম্ভব।’
দেশের একজন সংসদ সদস্যের এমন ঘটনায় দেশের সম্মান নষ্ট হয়েছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য তিনি বিদেশের মাটিতে ক্রাইম করে জেলে গেছেন। এখন সাজা হয়েছে। এটা তো অসম্মানের। নির্ধারিত সময়ের পরে চাইলে নির্বাচন কমিশন এখন তার আসন শূন্য করে নির্বাচন দিতে পারে। কারণ একটা আসন তো আর শূন্য থাকবে না।’
যদিও দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, দেশের আদালতে দুইবছরের বেশি সাজা হলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যেত। কিন্তু বিদেশের আদালতে সাজা হলে পদ থাকবে কি না সে ব্যাপারে সংবিধানে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। এজন্য একটি সাংবিধানিক ব্যাখ্য দরকার। যা উচ্চ আদালত দিতে পারবে।
গতবছর কুয়েতে এমপি পাপুল গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের সন্ধান পায়। হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেয়ার বিষয়টিও উঠে আসে। এছাড়া তার দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয় নিয়েও আলোচনা-সমালোচনা হয়। অবশ্য এর পরপরই কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়ে দেয়া হয়— পাপুল তাদের দেশের নাগরিক নন।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন