চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে সোমবার মধ্যরাতে। মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে পোহালেই অনুষ্ঠিত হবে কাঙ্ক্ষিত চসিক নির্বাচন। আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সকল প্রক্রিয়া শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিশৃঙ্খলা রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নেমে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাখা হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। নির্বাচনের মাঠে রাখা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। এর মধ্যে রয়েছেন- প্রধান দুই দেলের হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী রীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন। এ ছাড়া রয়েছেন ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী মাওলানা এম এ মতিন। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর, ইমলামিক ফ্রন্টের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ, ইসলামী আন্দোলনের মো. জান্নাতুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী।
১৪ সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রার্থী রয়েছেন ৫৭ জন। সাধারণ ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩৯ ওয়ার্ডে। ১৮ নং ওয়ার্ডে হারুনুর রশিদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। আর ৩১ নং আলকরণ ওয়ার্ডে এক কাউন্সিলর প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নির্বাচন স্থগিদ করা হয়েছে। তবে ওই ওয়ার্ডে মেয়র ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৩৯ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১৬৮ জন প্রার্থী।
প্রচারণার শুরু থেকেই সংঘাত- সহিংসতার কারণে নির্বাচনকে ঘিরে রয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণে মাঠে থাকবে ১৪ হাজারের বেশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে, নির্বাচনকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। এবার সিটি নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সবকটি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। ইতোমধ্যে সব কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন ও ভোটগ্রহণ সামগ্রী পৌঁছে গেছে।
চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মাঠে থাকবেন বিজিবি, র্যা ব, পুলিশ, আনসার বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী। থাকবেন সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সংস্থাও।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী ও বহিরাগত লোকজন নগরী ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে আইনের আওতায় আনা হবে। নির্ভয়ে ভোট প্রদানের জন্য ভোটারদের প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি।
ভোটকেন্দ্র ও ভোটার :
নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটকক্ষ হচ্ছে ৪ হাজার ৮৮৬টি। প্রতি ভোটকক্ষে ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হবে। এবার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন এবং মহিলা ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা :
ভোটগ্রহণে দায়িত্বে থাকবেন ১৬ হাজার ১৬৩ জন কর্মকর্তা। সকলকে ইভিএম বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৫ হাজার ৯০২ জন এবং পোলিং অফিসার ১০ হাজার ২৬৮ জন।
ইভিএম :
চসিক নির্বাচনে এবার প্রথমবারের মতো ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১১ হাজার ৫৭২ ইভিএম। চার হাজার ৮৮৯টি ভোটকক্ষের জন্য থাকবে একটি করে ইভিএম মেশিন। এছাড়াও দুটি কক্ষের জন্য একটি করে ইভিএম মেশিন অতিরিক্ত রাখা হবে। আর ঝুঁকি এড়ানোর জন্যও বিশেষ ব্যাকআপ রাখা হয়েছে।
ব্রেকিংনিউজ/
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন