সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ পাকিস্তান সম্পর্কের দৃশ্যমান উষ্ণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশও সম্পর্কের আড়ষ্টতা ভেঙ্গে যেন খোলস ছাড়ছে। ইতিমধ্যে পাকিস্তান বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা প্রদানের নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করেছে। দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য সহজীকরণের কিছু দৃশ্যমান সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত এক বছরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সংগে একাধিকবার টেলি আলাপ করেছেন। বিজয়ের মাসেও বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই কমিশনার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন। কূটনীতিকরা মনে করছেন, পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা স্রেফ একটি কূটনৈতিক কৌশল। পাকিস্তান কখনও বাংলাদেশের বন্ধু হবে না।বাংলাদেশ কখনও ৭১ এর ক্ষত মুছে ফেলতে পারবে না। কিন্তু ভারতকে নমনীয় এবং চাপে রাখার কৌশল হিসেবেই বাংলাদেশ পাকিস্তান অস্ত্র ব্যবহার করছে।
গত একবছর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে বেশ কিছু অস্বস্তি দেখা দেয়। সীমান্তে হত্যা, তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে দীর্ঘ সূত্রিতা এবং অনিশ্চয়তা। হঠাৎ করে পিয়াজ রপ্তানী বন্ধের সিদ্ধান্ত, ইত্যাদি নানা বিষয়ে দুদেশের সম্পর্কের টানা পোড়েন সৃষ্টি হয়। এদিকে চীনের সংগে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়টি ভারতকে কিছুটা হলেও বিচলিত করে। বিশেষ করে, তিস্তার পানি সংরক্ষণে চীনা অর্থায়নে জলাধার নির্মাণের বিষয়টি ভারতকে উদ্বিগ্ন করে। এই টানা পোড়েন কাটাতে করোনার মধ্যেও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ঢাকা সফর করেন। আগামী ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব দিল্লী যাচ্ছেন। আগামী মার্চে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের কথা রয়েছে।
এই উপমহাদেশে ভারতের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা পাকিস্তান তাই বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানের সংগে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহ দেখায় সেটা ভারতকে সবচেয়ে উদ্বিগ্ন করবে, এটা বলাই বাহুল্য। আর একারণেই বাংলাদেশ ‘পাকিস্তান’ কার্ড খেলছে অনেক কূটনীতিক মনে করেন। কারো কারো মতে, বাংলাদেশের দিকে ‘পাকিস্তান’ কে ঠেলে দেয়ার পেছনে চীনেরও ভূমিকা রয়েছে। তবে, ভারত কখনও চাইবে না তার চিরশত্রু পাকিস্তান বাংলাদেশের ‘বন্ধু’ হোক। বাংলাদেশকে পাশে রাখতে ভারত সম্ভাব্য সব কিছুই করবে। আর একারণেই করোনা ভ্যাক্সিন রপ্তানী করা হবে না বলে আবার পিছু হটেছে ভারত। শুধু তাই নয়, উপহারের টীকাও দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা নিয়েছে। পাকিস্তান জুজুতে তাহলে কি কাজ হয়েছে?
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন