২০১৫ সালে পীরগঞ্জ শাহ আবদুর রউফ কলেজকে সরকারিকরণের ঘোষণা দেয়া হয়। এরপরই বেশকিছু শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে যাওয়ায় সংকটের কবলে পড়েছে কলেজটি। ওই ঘোষণার কারণে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ আর শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারছে না।
অপরদিকে সম্প্রতি কলেজটির অনার্সের আটজন প্রভাষক বরখাস্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। করোনাকালে অনলাইনে ক্লাস নিয়েও হিমশিম খাচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭০ সালে উপজেলা সদরে শাহ আবদুর রউফ কলেজ প্রতিষ্ঠার পর এমপিওভুক্ত হয়ে ডিগ্রি অধিভুক্ত হয়। পরে কলেজে ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষে ৯টি বিষয়ে পাঁচজন করে মোট ৪৫ জন প্রভাষক এবং ৯ জন কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। ওই প্রভাষকরা কখনই এমপিওভুক্ত কিংবা সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না- এমন শর্তেই তাদের নিয়োগ দেয়া হয়।
বর্তমানে কলেজটিতে এমপিওভুক্ত হিসেবে অধ্যক্ষ, একজন উপাধ্যক্ষ, ৪৩ জন প্রভাষক, দুইজন প্রদর্শক এবং ১২ জন পিয়ন রয়েছেন। আর ইংরেজি, মনোবিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যায় একজন করে মোট চারজন প্রভাষক নন-এমপিওভুক্ত।
২০১৫ সালে কলেজটি সরকারিকরণের ঘোষণার পর বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে গেলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ আর কোনো নিয়োগ দিতে পারেনি। কারণ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এনটিআরসিএ থেকে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হলেও শাহ আবদুর রউফ কলেজ সরকারিকরণের পর্যায়ে থাকায় আর নিয়োগ হচ্ছে না। করোনাকালে কলেজের পাঠদান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে ক্লাস নিয়েও হিমশিম খাচ্ছে কলেজটি। ফলে ভাড়াটে শিক্ষক দিয়েও পাঠদান করা হচ্ছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, সরকারিকরণের ঘোষণার পর ২০১৬ সালে কলেজটির নথিপত্র রংপুর ডিডি অফিস, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের (ডিজি-মাউশি) কার্যালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পৌঁছতে প্রায় ৪ বছর সময় লেগেছে। সরকারিকরণের গেজেট প্রকাশের জন্য আরও প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কলেজের নথিপত্র জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির কাছে যাবে। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই শেষে পিএসসি হয়ে গেজেট প্রকাশিত হলে তারপরই শিক্ষক-কর্মচারীরা আত্তীকরণ হবেন বলে সূত্র জানায়। আর এই কয়েক বছরে আরও ১০-১২ জন শিক্ষক অবসরে যাবেন।
কলেজটির অধ্যক্ষ রাশেদুন্নবী চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, সরকারিকরণে যেভাবে সময় যাচ্ছে তাতে কলেজ চালানোই সমস্যা হয়ে পড়েছে। কলেজ চালাতে ভাড়াটে শিক্ষকও নেয়া হয়েছে। আগামী ৪-৫ বছর পর ১২-১৩ জন শিক্ষক অবসরে গেলে পাঠদানে চরম সমস্যার সৃষ্টি হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন