রহস্যজনক কারণে মাঝপথেই থেমে গেল বুড়িগঙ্গা তীর থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান। সোমবার দিনব্যাপী অভিযান চলার কথা থাকলেও বেলা আড়াইটায় হঠাৎ তা বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের মালিকানাধীন ‘চান সরদার মার্কেট’ ও চান সরদার কোল্ড স্টোরেজ লি.’র কাছাকাছি আসতেই কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলেন উচ্ছেদকারী দলের সদস্যরা।
রাজধানীর চকবাজার থানার বেড়িবাঁধ এলাকার বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর নিচ থেকে কামালবাগ পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্য নিয়ে অভিযানে নেমেছিল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
সূত্র জানায়, আগের দিনের মতো সোমবারও বিকাল চারটা পর্যন্ত অভিযান চালানোর কথা ছিল। যেসব স্থানে উচ্ছেদ করার কথা, বিআইডব্লিউটিএর সম্পত্তি নির্ণয় করে সেসব স্থান দাগ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল চান সরদার কোল্ড স্টোরেজের অংশবিশেষ ও টাইগার সিমেন্টের শোরুমও।
উচ্ছেদের শিকার একাধিক ব্যবসায়ী যুগান্তরকে বলেন, আমরা নিরীহ ব্যবসায়ী। নানাজনকে চাঁদা দিয়ে বাঁধের পাশে দীর্ঘদিন থেকে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা করি। ক্ষমতা নেই বিধায় আমাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় এমপি ক্ষমতাশালী। তার মার্কেটের কাছে আসতেই তদবিরের চাপে অভিযান বন্ধ করা হয়েছে।
হঠাৎ অভিযান বন্ধ করা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্মপরিচালক (বন্দর) গুলজার আলী যুগান্তরকে বলেন, বেড়িবাঁধ সড়কে যানজটের কারণে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে দিয়েছেন। সাধারণত সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চলে। এদিন বেলা ৩টা পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়েছে। কোনো মহলের চাপে অভিযান বন্ধ করা হয়নি দাবি করে গুলজার আলী বলেন, আমাদের দুই দিনব্যাপী প্রোগ্রাম ছিল। পরে আবার সময় নিয়ে অভিযান চালানো হবে।
উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব জামিল যুগান্তরকে বলেন, আমাদের টার্গেট ফুলফিল (লক্ষ্য পূরণ) হয়ে গেছে, এজন্য অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর আগে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে।
বিআইডব্লিউটএ সূত্র জানায়, বাবুবাজার থেকে সোয়ারিঘাট পর্যন্ত ১৫টি দোতলা ভবন, ২০টি একতলা ভবন, ২৫টি আধাপাকা ঘর, ৮৫টি টিনের ঘর ও ৫টি দেয়ালসহ ১৫০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ওই স্থানে উদ্ধার করা নদীর তীরভূমি দেড় একর। এছাড়া নির্বিঘ্নে যাত্রী ও যানবাহন চলাচলের স্বার্থে বাবুবাজার থেকে সোয়ারিঘাট পর্যন্ত ভাসমান দোকান অপসারণ করা হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন