নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে নিজ ঘরে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে থাকা ভিডিও ফুটেজের একটি কপি সংরক্ষণ করে বাকিগুলো সরানো হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে বিটিআরসি।
এ ছাড়া ওই ঘটনা অনুসন্ধানে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা হয়েছে।
আদালতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।
বিটিআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আদালতের আদেশ মতো একটি কপি সংরক্ষণ করা হয়েছে। একটি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ফেসবুক বিটিআরসিকে ফুটেজ সরানোর কথা ই-মেইলের মাধ্যমে জানিয়েছে। এর আগে গত ৫ অক্টোবর ঘটনাটি আদালতের নজরে আনার পর ফুটেজ সরানো নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সিডি বা পেনড্রাইভে কপি রেখে ভিডিও ফুটেজ সরাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া ওই নারীর পরিবারকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের বক্তব্য নিতে পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কিনা, তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দিয়েছেন আদালত। নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটিতে থাকবেন জেলা সমাজসেবা অফিসার এবং চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষ। কমিটি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
ওই ঘটনায় করা ফৌজদারি মামলার সবশেষ অবস্থা জানিয়ে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে আদালতকে প্রতিবেদন দিতে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব আদেশ অনুসারে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে বলে আদালতকে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে এক গৃহবধূর (৩৫) বসতঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রেখে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন স্থানীয় বাদলসহ একদল বখাটে যুবক। ওই সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইল ফোনে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন।
ঘটনার ৩২ দিন পর ৪ অক্টোবর দুপুরের দিকে গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে তা ভাইরাল হয়। এতে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্থানীয় দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও তাদের সহযোগীরা ভুক্তোভোগী গৃহবধূর পরিবারকে কিছুদিন অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে তার পুরো পরিবারকে বসতবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেন তারা। এ কারণে ঘটনাটি দীর্ঘদিন স্থানীয় জনগণ ও পুলিশ প্রশাসনের অগোচরে ছিল।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন