উচ্চ আদালতের রায়ের পর কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টের সেই ৫২ স্থাপনা অবশেষে উচ্ছেদ করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এ উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রে তৈরি হয় এলাকাটিতে।
শনিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল থেকে দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়ার পর ব্যবসায়ীরা কফিনের কাপড় পড়ে বিক্ষোভ করেন। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর রাশেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ঘটনার সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ফাঁকা গুলি বর্ষণ, টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছে। তবে শেষ পর্যন্ত স্থাপনা উচ্ছেদ করতে পেরেছে প্রশাসন। সেসময় সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘‘এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল নোটিশ প্রদান করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এর বিরুদ্ধে ১৬ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট দাখিল করেন ব্যবসায়ীরা। ওই দিন উচ্ছেদ স্থগিতাদেশ প্রদান করে রুল জারি করেন আদালত। সরকার পক্ষের আপিলে প্রেক্ষিত গত ১ অক্টোবর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে উচ্ছেদের আদেশ প্রদান করা হয়।
‘এ রায়ের প্রেক্ষিতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক), জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) উচ্ছেদ অভিযানে নামে। অভিযানের প্রথম দিন দুপুর ২টার মধ্যে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সেসময় ব্যবসায়ীরা আরো বেশি সময় চাইলে শনিবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।’’
তিনি জানান, শনিবার দুপুরে দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদে নামে প্রশাসন। এসময় বাঁধা প্রদান করেন ব্যবসায়ীরা। তারা কফিনের কাপড় পরে রাস্তায় বিক্ষোভ করেন।
সেসময় আপিল বিভাগের নির্দেশ পালন করতে প্রশাসন ব্যবসায়ীদের সহায়তা চেয়ে দফায় দফায় মাইকিং করেন। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্রশাসন উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করলে এতে বাঁধা প্রদান করা হয়। পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে তিন দিক থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে সাংবাদিকসহ অনন্ত ১০ জন আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকাগুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন। এতে ব্যবসায়ীরা পিছু হটতে শুরু করেন। পরে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। অভিযানে ধারাবাহিকভাবে ৫২টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
এদিকে সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান এবং হামলা ঘটনায় মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ বড়ুয়া।
তিনি জানান, এর মধ্যে আট জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন