তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইংলিশ স্পোকেন ও আইইএলটিএস প্রশিক্ষণ সেন্টার `শাফিন'স এর প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠাতা শেখ বুলবুল আহমেদের (শাফিন) বিরুদ্ধে বানোয়াট যৌন হয়রানির মামলা করে একটি কুচক্রি মহল। অথচ মামলার এজাহারে যে সময় যৌন হয়রানীর অভিযোগ করা হয় সে সময় দেশেই ছিলেন না শাফিন। এমনকি মামলার কথিত বাদি সাদিয়া আফরিনের কোনো অস্তিত্বই খুজে পায়নি সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ। মামলায় একাধিক বার আদালতে হাজিরা দেন শাফিন। কিন্তু বাদী সাদিয়া আফরিন একবারও আদালতে আসেননি।
তদন্ত কর্মকর্তার দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদনের (এফআরটি) প্রেক্ষিতে অবশেষে ১৬ সেপ্টেম্বর মামলার আসামি শেখ বুলবুল আহমেদকে (শাফিন) মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালত। শাফিনের অভিযোগ কুচক্রিমহলের প্ররোচনায় এই ধরণের মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে হেয় ও হয়রানি করা হয়েছে। ব্যবসায়িকভাবে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। তিনি ওই মহলের বিচার দাবি করেছেন।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
ওই সময় তিনি মিথ্যা মামলা দেয়ার সাথে জড়িত এবং এখনো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা তার বিরুদ্ধে কুৎসা রাটাচ্ছেন তাদের বিচার দাবি করেন।
শাফিন জানান, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে ইংলিশ স্পোকেন ও আইইএলটিএস প্রশিক্ষণ সেন্টার ‘শাফিন’স এর মাধ্যেমে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি পেশাজীবীদের ইংরেজি ভাষা শিখিয়ে আসছেন। কোচিং সেন্টারের পাশাপাশি গত পাঁচ বছর যাবত তিনি নিজস্ব একটি ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমেও অনলাইনে ফ্রি ইংলিশ শিখাচ্ছেন। যার মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বিনা মূল্যে ইংরেজি ভাষা শিখতে পারছে।
সম্প্রতি শেখ বুলবুল আহমেদের (শাফিন) ইউটিউব চ্যানেলটি দেশের শীর্ষ চ্যানেলে পরিণত হয়। চ্যানিলটিতে সাবসক্রাইবার ৬ লাখেরও বেশী। তবে একটি কুচক্রী মহলের চোখ পড়ে তার ব্যবসায়িক সাফল্য ও জনপ্রিয়তায়।
গত বছর শেখ বুলবুল আহমেদের সাথে গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে সুপে ব্যাটারি পাওয়া নিয়ে ঘটে যাওয়া একটি তুচ্ছ ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। ওই ঘটনার পরই মহলটি তার ব্যবসায়ীক ক্ষতি ও সম্মানহানীর জন্য নানা তৎপরতা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের জুলাইয়ে তার নামে তারই কোচিং সেন্টারের ছাত্রী পরিচয়ে এক তরুণী যৌন হয়রানীর মামলা করে।
সাদিয়া আরফিন নামক ওই তরুণী বাদী হয়ে মিরপুর পল্লবী থানায় গত বছরের ১০ জুলাই শেখ বুলবুলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। যে মামলার চার্জশিট নম্বর ১২০ যা ০২ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
তিনি বলেন, কথিত সাদিয়া আরফিন মামলায় উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর আমি তাকে যৌন হয়রানি করি। অথচ উল্লেখিত তারিখে আমি দেশেই ছিলাম না। তার চার দিন পূর্বে ৬ নভেম্বর আমি বিদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি এবং ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর আমি বিদেশে অবস্থান করছিলাম।
শেখ বুলবুলের দাবি, কুচক্রি মহলটি ওই তরুণীকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা ওই তরুণীকে দিয়ে একটি চ্যানেলের সহযোগিতা নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই না করেই আমাকে অপরাধী করে সংবাদ পরিবেশন করে যা আমার ইমেজকে আরো ক্ষুন্ন করেছে।
শেখ বুলবুল বলেন, দেশে এসে তার বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যা মামলা তিনি আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করেন। আদালতের রায়ে এই মামলাকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক বলে আখ্যায়িত করা হয়। পুলিশি তদন্তে অভিযোগকারী সেই শিক্ষার্থীর ঠিকানা ভুয়া হিসেবেও প্রমানিত হয়।
শেখ বুলবুল বলেন, এ ঘটনায় এখনও আমি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। নিকটজনদের কাছেও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমি আমার হারানো সম্মান ফিরে পেতে চাই। আমার প্রতিষ্ঠানটিকে আগের মত করে গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতা চাই। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই তিনি ইউটিউবের মধ্যমে তার সম্মানহানী করায় তাহসিনেশন ও নাসিম নামে দুই ইউটিউবারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। যা বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে। তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী বাদী শিক্ষার্থীর খোঁজ না পাওয়ায় মামলা করতে পারছেন না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন