মেয়ের কর্মস্থল প্রতিষ্ঠানকে চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহর বিরুদ্ধে। অর্থ পাচার, অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ দীর্ঘদিনের এমডির বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে এক গ্রাহক রিট করলে তার প্রেক্ষিতে দুদক কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এদিকে রিটের পরদিনই ওয়াসা ভবনে আগুন লেগে নথিপত্র পুড়ে যাওয়ার ঘটনাকে সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে।
প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্প। ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হয় গত নভেম্বরে। অভিযোগ উঠেছে, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বিইটিইএস এ বর্তমানে চাকরি করেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ এর মেয়ে সুমাইয়া বিনতে ফজলুল্লাহ। আর মালয়েশিয়াভিত্তিক আরেকটি প্রতিষ্ঠান এরিঙ্কোতে আগে কাজ করতেন তিনি। মেয়ের দুটি কর্মস্থলকে পরামর্শক নিয়োগের অভিযোগ ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে।
চট্টগ্রাম ওয়াসা এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বলেন, দুইটা কোম্পানিতে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন; যেখানে ওনার মেয়ে জড়িত। এই সুবাদে তিনি কাজ দিয়েছেন।
মেয়ের প্রতিষ্ঠান কিভাবে নিয়োগ পেল জানতে চাইলে কৌশলে এড়িয়ে যান ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরকে ছয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে; সেই ছয়ভাগের একটি পরিকল্পনা করে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে দেই। প্রধানমন্ত্রী সেটাকে বাস্তবায়ন করার জন্য ওয়াসাকে নির্দেশ দেন।
এদিকে প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহর বিরুদ্ধে অর্থপাচার, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে। তারপরও আবার তাকে পুনঃনিয়োগ দিতে বোর্ডের সুপারিশ গেছে মন্ত্রণালয়ে।
এ অবস্থায় গত বুধবার এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে দুদক কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন উচ্চ আদালত।
চট্টগ্রাম বিভাগের দুদক পরিচালক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা আদেশটা এখনো হাতে পাইনি। পৌঁছালে বলতে পারবো। পদক্ষেপ-তো আগে থেকেই একটা অনুসন্ধান চলমান আছে।
চট্টগ্রাম সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি আখতার কবির চৌধুরীর বলেন, সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট চলছে। সেই প্রজেক্টকে সকলকে যোগান দিতে তিনি পারদর্শী। বাকিরা জানেন না বলে এখানে রদ-বদল হয় না।
এদিকে রিটের পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে ওয়াসা ভবনের প্ল্যানিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন বিভাগে আগুন লাগে। এতে প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে গেলে অনিয়মের কালো মেঘ আরো ঘনীভূত হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন