বাংলাদেশে গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত বিএসএফ কর্মকর্তাসহ দুজনের বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পেয়েছে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। গত বুধবার দিনভর তল্লাশির পর সিবিআই জানায়, বিএসএফ কর্মকর্তা সতীশ কুমার ও পাচারকারী এনামুল হক বেনামি সংস্থা খুলে কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেন চালিয়ে গিয়েছেন। প্রথম দিনের তল্লাশির পরে গরু-সোনা-মাদক পাচারের সন্ধান মিলেছে বলে তদন্তকারী সংস্থার দাবি। এর সূত্র ধরে একে একে এই চক্রের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তারা।
ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার গরু পাচার সংক্রান্ত সিবিআই’র মামলাটি নথিভুক্ত হয়। পরদিন মঙ্গবার পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল আদালত থেকে তল্লাশির অনুমতি নেয় সিবিআই। এর পরদিন বুধবার চলে তল্লাশিতে এনামুলের কলকাতার কয়েকটি ঠিকানা, আস্তানা এবং মুর্শিদাবাদের কয়েকটি স্থানে তল্লাশি চালানো হয়।
সিবিআইয়ের দাবি, এনামুল গরু পাচারের পাশাপাশি চাল কল, বাংলাদেশে চাল-পেঁয়াজ রপ্তানি, আবাসন ও নির্মাণ শিল্প, পাথর, বালির কারবারে যুক্ত। তার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৩০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ১০ লাখ ডলার রাখা ছিল। এ ছাড়া নামে-বেনামে বহু সম্পত্তির হদিস মিলেছে।
সিবিআই কর্মকর্তারা জানান, দুই-একটি একাউন্টে এই পরিমাণ টাকা থাকলে এনামুল বাহিনীর হাতে কী পরিমাণ নগদ রয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়।
অন্য দিকে, বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমারের সল্টলেকে একটি বাড়ি ও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া, গাজিয়াবাদে তিনটি বাড়ি, দুটি জমি, অমৃতসরে বাগানবাড়ি, মুসৌরিতে হোটেল, রায়পুর ও শিলিগুড়িতেও জমি-বাড়ি রয়েছে। গত বুধবার সব জায়গাতেই সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে। নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। সল্টলেকের বাড়িটি তল্লাশির সময় কোনো মালিক পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই বাড়িটি সিল করে দিয়েছে সিবিআই।
তদন্তকারীরা জানান,যার বাড়ি তিনি নিশ্চই তদন্তকারীদের কাছে কাগজপত্র দেখিয়ে বাড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে যাবেন। পাচারের নেটওয়ার্কের এমন অনেক রাঘববোয়ালের বেনামি সম্পত্তি সিবিআই হাতে পেয়েছে। বোলপুরের আশপাশে এমন ৫০টিরও বেশি ‘সম্পত্তি’ সিবিআই দখল নিয়ে নিতে পারে বলেও জানা গেছে। এক সিবিআই কর্মকর্তা জানান, সতীশ কুমারের মতো সাধারণ বিএসএফ কর্মকর্তার সম্পত্তি দেখেই বোঝা যাচ্ছে, বড় মাথাদের টান মারলে কী বেরোতে পারে। সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে সিবিআই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন