একে একে খসে পড়েছে তারা। বিদায় নিচ্ছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা। লুৎফর রহমানের মৃত্যুর মাত্র আড়াই মাসের মধ্যেই, এবার জাগতিক মায়া ছেড়ে বিদায় নিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের স্ট্রাইকার নওশেরুজ্জামান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার সময় মারা যান অকুতোভয় এ ফুটবল বীর।
ক্ষিপ্রতায় যার উপমা ছিল বাজপাখি। ফিনিশিংয়ে যার তুলনা, সে নিজেই। শুধু ফুটবলই নয়, ক্রিকেট কিংবা অ্যাথলেটিক্স। সমান দাপটে মাতিয়েছেন মাঠ। সেই নওশেরুজ্জামান আজ শুধুই স্মৃতি।
ফুটবলই নওশেরকে দিয়েছে আলাদা পরিচিতি। স্বাধীনতার আগে খেলেছেন রেলওয়ে, ওয়ারী, ফায়ার সার্ভিস ও ভিক্টোরিয়ার হয়ে। যুদ্ধ চলাকালে চলে যান আগরতলায়। পরে স্বাধীনবাংলা ফুটবল দল গঠন হলে তাজউদ্দীন আহমদের বিশেষ সহায়তায় সালাউদ্দিন, এনায়েত, আইনুল, কায়কোবাদদের সঙ্গে তাকেও আগরতলা থেকে উড়িয়ে আনা হয় বিএসএফের বিশেষ বিমানযোগে।
পাকসার্কাস ময়দানে অনুশীলনের প্রথম থেকেই নিয়মিত মুখ নওশের। স্বাধীন বাংলা দলের হয়ে অংশ নিয়েছেন প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই।
স্বাধীনতার পরে হয়েছেন আরও ক্ষিপ্র। খেলেছেন ওয়াপদা, মোহামেডান ও ওয়ান্ডারার্সের জার্সিতে। ৭৩ থেকে ৭৬ এই তিন বছর ছিলেন জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ।
ক্রিকেটে মোহামেডানের হয়ে ওপেনিং করেছেন তিন মৌসুম। কলাবাগান আর ভিক্টোরিয়ার হয়ে খেলেছেন ৮ বছর। খেলাধুলায় বিশেষ অবদান রাখায় পেয়েছেন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্লু’ পদক।
সারাটাজীবন দেশের ফুটবলের জন্যই লড়ে গেছেন নওশের। ৭২ বছর বয়সেও শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছেন করোনার বিরুদ্ধে। হয়তো হেরেছেন, তবুও দিনশেষে নওশেরুজ্জামানরাই বিজয়ী। তাইতো এই বীরের প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।
শীর্ষনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন