কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় তার বোনের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার স্পর্শকাতর এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়।
শুক্রবার (১৪ আগস্ট) র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) এর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পরিবর্তনের আগে র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জামিলুল হক মামলাটির তদন্ত করছিলেন। তার জায়গায় খায়রুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
এদিকে মেজর সিনহা হত্যা মামলায় শুক্রবার সকালে ৪ পুলিশ সদস্যসহ ৭ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে র্যাব।
তবে বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলায় র্যাবের রিমান্ডে নেয়া ৭ জনের মধ্যে নেই মামলায় ১ নম্বর আসামি টেকনাফ বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মো. লিয়াকত, ২ নম্বর আসামি টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস ও ৩ নম্বর বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত।
রিমান্ডে নেয়া ৪ পুলিশ সদস্য হলেন- সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন। অপর তিনজন হলেন- মো. আয়াছ, মো. নুরুল আমিন ও মো. নাজিমুদ্দিন। এই তিনজন সিনহা নিহতের পর টেকনাফ থানায় পুলিশের করা দুটি মামলার সাক্ষী।
এই ৭ আসামির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে গত ৬ আগস্ট সিনহা হত্যা মামলায় লিয়াকত, প্রদীপ ও নন্দদুলাল রক্ষিত এই তিন পুলিশকে ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন কক্সবাজারের সিনিয়র জুটিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের আদালত।
অন্যদিকে সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয়া হয়। গত ৮ ও ৯ আগস্ট কক্সবাজার কারাগারের জেলগেটে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। পরদিন ১০ আগস্ট তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করে র্যাব। শুনানি শেষে আদালত ওইদিনই ৪ পুলিশ সদস্যকে ৭ দিন করে রিমান্ডে পাঠায়।
মামলার এজাহারভুক্ত অপর ২ পুলিশ সদস্য পলাতক আছেন। এছাড়া লিয়াকত, প্রদীপ ও নন্দদুলাল আছেন কারাগারে।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাক বাহারছড়া চেকপোস্টে নিরাপত্তা চৌকিতে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক আইনে এবং রামু থানায় মাদক আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে।
হত্যাকাণ্ডের ৫ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসী বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে এসআই লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মেজর সিনহা হত্যায় পুলিশের করা মামলায় সিনহার সঙ্গে থাকা শিপ্রা দেবনাথ গত রবিবার ও শাহেদুল ইসলাম সিফাত গত সোমবার জামিনে মুক্ত হন। গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাব।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন