ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে রোগীর ভুল চিকিৎসা এবং অতিরিক্ত বিল আদায়ের ঘটনা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তবে কমিটি গঠনের দুই সপ্তাহেও তদন্ত কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি কমিটি। ভুল চিকিৎসায় যে রোগীর মৃত্যু হয়েছে তার নাম-ঠিকানা বা অভিযোগকারী স্বজনদের বিস্তারিত তথ্য তদন্ত কমিটির সদস্যদের কাছে না থাকায় অভিযোগকারীকে খুঁজছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য সোমবার (১০ আগস্ট) জাগো নিউজকে বলেন, একটি জাতীয় দৈনিকের ‘পপুলারে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু’ শিরোনামে নিউজের ক্লিপিং তাদের কাছে রয়েছে। কোন প্রতিবেদক ওই প্রতিবেদনটি করেছেন, তার কাছে নাম-ঠিকানা আছে কি-না, তা জানতে তিনি ওই জাতীয় দৈনিকে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছেন। তবে তিনি এ বিষয়ে তাদের কাছ থেকে সাড়া পাননি। মূলত এ কারণেই দুই সপ্তাহেও তদন্ত কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব শিগগিরই বাদীর নাম-ঠিকানা সংগহ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওই কর্মকর্তা।
গত ২৭ জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (এফএমএইউ) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে সভাপতি করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তদন্ত কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে যে, রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর মৃত্যু, অতিরিক্ত বিল আদায় এবং মৃতদেহ বাইরে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করেছেন। এমতাবস্থায় বিষয়টি তদন্তের জন্য এই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কমিটিকে জরুরিভিত্তিতে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়।
যে ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ থেকে কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ১০ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে ভর্তি হন ৮০ বছর বয়সী রওশন আলী সিকদার। প্রাথমিক পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, তিনি করোনা পজিটিভ। শুরু হয় চিকিৎসা। ভর্তির ১৫ দিনের মাথায় মারা যান রওশন আলী। এরই মধ্যে দুই দফা আইসিইউ ও নানা পরীক্ষার বিল হিসেবে ধাপে ধাপে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মারা যাওয়ার পর জানানো হয়, রোগীর করোনা হয়নি। এই অবস্থায় এই ১৫ দিন কিসের চিকিৎসা করা হলো এবং পাঁচ লাখ টাকাই বা কেন নেয়া হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর স্বজনরা।
স্বজনদের অভিযোগ, টাকা পাওয়ার পর মরদেহ হাসপাতালের বাইরে ফেলে রাখা হয়। পরে পুলিশকে জানানো হলে মরদেহ নেয়া হয় হাসপাতাল মর্গে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনার সব উপসর্গ থাকলেও অনেক সময় পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। রওশন আলীর শারীরিক নানা জটিলতা থাকায় শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে পপুলার হাসপাতালের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের স্বজনরা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন