ঈদের ছুটিতে স্বপরিবারে গ্রামের বাড়িতে ফেরার পথে সিলেটের ওসমানী নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় চালকও নিহত হয়েছেন। রোববার ভোররাতে ঘটনাস্থল থেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া এ পরিবারের বড় ছেলেটিও মারা গেছে।
জানা যায়, শনিবার ভোরে একটি প্রাইভেট কারযোগে স্বপন কুমার দাস, তার স্ত্রী লাভলী রানী দাস ও তিন ছেলেকে নিয়ে নিজে বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের শ্যামারচর গ্রামে ফিরছিলেন। ফেরার পথে ওসমানী নগর এলাকায় আসলে কুমিল্লা ট্রার্ন্সপোর্টের একটি বাস প্রাইভেট কারটিকে চাপা দেয়। এতে ড্রাইভারসহ ঘটনাস্থলে এ পরিবারের ৪ জন নিহত হন। পরে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বড় ছেলে সৌরভ দাসও মারা যায়।
নিহতরা হলেন স্বপন কুমার দাস (৪৫), স্ত্রী লাভলী রানী দাস (৩৮), বড় ছেলে সৌরভ দাস (১২) ও দুই জমজ ছেলে সৌমিত্র দাস (৭), শৈবাল দাস (৭) ও কারের চালকসহ ৬ জন ।
বিকেলে ময়না তদন্ত শেষে বড় ছেলে সৌরভের লাশ তাদের গ্রামের বাড়ি শ্যামারচরে নিয়ে আসার কথা রয়েছে। স্বপন কুমার দাস ব্র্যাকের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল অফিসে কর্মরত ছিলেন।
শনিবার সন্ধ্যায় নিহত চারজনের লাশ তাদের গ্রামের বাড়ি শ্যামারচরে নিয়ে আসলে এক হৃদয় বিধারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। খবর শুনে আশপাশের শত শত মানুষ জড়ো হন নিহতের বাড়িতে অনেকইে চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি।
খবর পেয়ে নিহতের গ্রামের বাড়িতে ছুটে যান দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজ্ঞুর আলম চৌধুরী, চরনারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রতন কুমার দাস তালুকদার ও কমিউনিষ্ট পার্টির নেতা কমরেড বাবু অমর চান দাস,বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী মোঃ আজিজুল হক প্রমুখ।
চরনারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রতন কুমার দাস তালুকদার জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এলাকা হচ্ছে শ্যামারচর। এখানে প্রতিটি ধর্মের মানুষজনের মধ্যে স্বাধীনতা পরবর্তী একটি সম্প্রীতির মিলবন্ধন রয়েছে। ধর্ম যার যার হলেও আমরা প্রতিটি ধর্মের মানুষজন বিশেষ করে যারা চাকরিজীবী রয়েছেন পূজা কিংবা ঈদের ছুটিতে সবাই নিজ নিজ এলাকায় ছুটে আসেন এবং সবাই মিলে একাকার হয়ে আমরা আনন্দে মেতে উঠি।
আর এরই অংশ হিসেবে দুর্ঘটনায় নিহত স্বপন কুমার দাস যদিও ব্র্যাকে তিনি শ্রীমঙ্গলে চাকুরী করতেন মূলত ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতেই তিনি স্বপরিবারের গ্রামের বাড়িতে কারযোগে রওয়ানা দিয়েছিলেন। তার সেই আনন্দটা ওসমানী নগরে কুমিল্লা ট্রার্ন্সপোর্টের ঘাতক বাসটি তিনি তার স্ত্রী ও তিনি ছেলের জীবনটা কেড়ে নিল। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সকলের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের সকল সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন