টাংগুয়ার হাওরসহ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পষ্টগুলোতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঈদ মৌসুমে নৌকা, স্পিডবোট দিয়ে দলবেঁধে দেশের বিভিন্ন স্থানের হাজার হাজার পর্যটক ও দর্শনার্থীরা এসেছেন।

এখানে এসে মানা হচ্ছে না করোনা স্বাস্থ্যবিধি। যে যার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এতে করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি। আর গত মাস খানেক ধরে যে হারে পর্যটক আসছে এতে করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

এভাবে পর্যটকদের আগমন বাড়তে থাকলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে দ্রুত করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঘটবে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে এখনই প্রশাসনিক কঠোর নজরদারি না বাড়ালে তাহিরপুরে করোনার কঠিন পরিস্থিতির শিকার হতে হবে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানি ঈদে টাংগুয়ার হাওর, ট্যাকেরঘাট এলাকায় শহীদ সিরাজ লেক (নিলাদ্রী লেক), বারেকের টিলা, যাদুকাটা নদী ও শিমুল বাগানে পর্যটকের আগমন ঘটেছে।

করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই পর্যটকদের মাঝে। স্পিডবোট ও বড় ইঞ্জিন চালিত নৌকা দলবদ্ধভাবে উচ্চস্বরে সাউন্ড বক্সে গান বাজিয়ে নাচানাচি করছে সবাই। রাত্রিযাপনও করছেন নৌকাতেই অনেকেই। মাস্ক বা শারীরিক দূরত্বের স্বাস্থ্যবিধি কেউই মানছেন না।

স্থানীয়রা জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আশংকায় গত ১৯ মার্চ থেকে পর্যটক আগমনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় পর্যটকশূন্য ছিল তাহিরপুর উপজেলার টাংগুয়ার হাওর, ট্যাকেরঘাট, বারেকের টিলা, যাদুকাটা নদী ও শিমুল বাগান। কিন্তু গত এক সাপ্তাহ ধরে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন পর্যটকেরা।

এছাড়াও তাহিরপুর উপজেলার স্থানীয় এলাকাবাসী ও উপজেলার বাজারের নৌকাঘাট থেকে ও থানার ঘাট থেকে স্পিডবোট দিয়ে যাতায়াত করছে পর্যটকরা। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো বাধা না থাকায় তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

টাংগুয়ার হাওরে নেত্রকোণা থেকে ঘুরতে আসা আল আমিন বলেন, করোনাকালে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আমরা বন্ধুরা মিলে দুই নৌকা করে প্রায় ২৫ জন এসেছি। তবে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঘুরাফেরা করছি।

তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণা সিন্দু বাবুল চৌধুরী বলেন, করোনাকালে এভাবে পর্যটক আসতে থাকলে আমাদের তাহিরপুরবাসীর জন্য করোনা মোকাবেলা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। করোনার এই মহামারির সময়টায় হাওরে পর্যটকদের আসতে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। এটা সবার ভালোর জন্যই। তবে পর্যটকদের বিষয়ে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ বলেন, করোনা সংক্রমণের শুরুতেই করোনা প্রতিরোধ উপজেলার প্রতিটি পর্যটন স্পটে পর্যটকদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ সত্ত্বেও যারা আসছেন তারা ব্যক্তিগতভাবেই আসছেন। অভিযান চলাকালে কোনো পর্যটককে পর্যটনস্পটের এলাকায় পেলে তাদের আইনের আওতায় এনে জরিমানা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস