করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার বিস্তার; প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত জাতীয় জীবন, সেই সময় এলো আনন্দের উপলক্ষ ঈদুল আজহা।
মহামারীর এই দুঃসময়ে ঈদুল আজহা যেন সব আঁধার সরিয়ে মানুষের মধ্যে অনাবিল আনন্দ নিয়ে আসে সেই প্রত্যাশা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সারা বিশ্বকে আতঙ্কিত ও স্থবির করে দেওয়া করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই মাস দুয়েক আগে এসেছিল মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ভাইরাস আতঙ্কের সেই সময়ের ঘরবন্দি দশা ঘুচলেও এখনও প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ।
এই সঙ্কটের দিনেও ঈদ ঘিরে উজ্জীবিত হওয়ার চেষ্টা করছে মানুষ, সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের আশায় সামর্থ্যবান অনেকে কোরবানির জন্য পশু কিনেছেন।
ঢাকার হাটগুলোতে গরুর দাম কম ওঠায় শুরুতে ক্রেতারা খুশি ছিলেন, বিক্রেতাদের মধ্যে ছিল হাহাকার। তবে শেষ দিনে অনেক হাটে গরুর সঙ্কট দেখা যায়, দাম বাড়ায় বিক্রেতারাও ছিলেন খুশি। এই মহামারীতে সরকারি-বেসরকারি সব চাকরিজীবীকে যারা যার কর্মস্থলের এলাকায় ঈদ করতে বলেছে সরকার। তারপরও সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ির পথ ধরেছেন অনেকে।
পদ্মায় তীব্র স্রোতে পারাপার ব্যাহত হওয়ায় ঈদের আগের দিন শুক্রবার শিমুলিয়ায় ছিল ব্যাপক ভিড়, পাটুরিয়ায় ছিল দীর্ঘ জট। ঢাকা থেকে উত্তরের পথে টাঙ্গাইল মহাসড়কের থেমে থেমে যানজট চলে সারাদিন।
শনিবার ঈদুল আজহার সকালে জাতীয় ঈদগাহে কোনো ঈদ জামাত হচ্ছে না। রোজার ঈদের মতই খোলা ময়দান বাদ দিয়ে সারা দেশে মসজিদে মসজিদে ঈদ জামাতের আয়োজন হয়েছে।
জামাতে একসঙ্গে নামাজ আদায়ের সুযোগ হলেও কোলাকুলি করা যাচ্ছে না, হাত মেলানোও বন্ধ। করোনাভাইরাস অতি ছোঁয়াচে বলেই এ ব্যবস্থা।
সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, সব ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীসহ বিশ্বের মুসলমানদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, “এ বছর এমন একটা সময়ে ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন মহামারী করোনার ছোবলে বিশ্ববাসী বিপর্যস্ত। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অনেক মানুষই মানবেতর জীবনযাপন করছে। এসব মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
“করোনা মোকাবেলায় সকলকে সচেতন হতে হবে এবং জীবনযাপনে ও চলাফেরায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিজে সুস্থ থাকি, অন্যকেও সুস্থ রাখি- এটাই হোক এবারের ঈদুল আজহায় সকলের অঙ্গীকার।”
সবাইকে সরকার নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দিতে এবং কোরবানির বর্জ্য অপসারণসহ সব কাজে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন