করোনার নমুনা পরীক্ষায় জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কার্ডিয়াক সার্জন সাবরিনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে আদালতে তোলার পরও স্বজনদের কেউ তার পাশে দাঁড়াননি, আসেননি কেউ তার খোঁজ নিতে।
সোমবার দুপুরের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত দিকে এই রিমান্ডের আদেশ দেন।সাবরিনাকে আদালতে হাজির করে ৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডের আদেশ দেওয়ার পর ডা. সাবরিনাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে থেকেই তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা কথা।
সিমএম আদালতের হাজতখানা ও তেজগাঁও থানা সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর আদালতের রিমান্ডের আদেশ দেওয়া পর্যন্ত প্রায় ১৮ ঘণ্টা পার হলেও তার পরিবারের কোনো সদস্য বা স্বজনদের কেউই সাবরিনার খোঁজ নিতে আসেননি।
গ্রেপ্তারের পর জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে তেজগাঁও থানার জেলা হাজতে রাখা হয়। স্বাভাবিকভাবেই তিনি সেখানে রাত কাটান। তবে এসয় তাকে কথাবার্তা বলতে শোনা গেছে কমই। অনেকটাই চুপচাপ হয়ে গেছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যায় ডিএমপির তেজগাঁও উপ-পুলিশ কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয় থেকে তাকে নেওয়া হয় তেজগাঁও থানায়। এরপর থানার ‘উইম্যান এন্ড চাইন্ড কেয়ারের’ একটি রুমে তাকে রাখা হয়। রাতভর তিনি সেখানেই ছিলেন। তার সেলের দায়িত্বে ছিলেন তিনজন নারী কনস্টেবল।
হাজতে থাকার সময় ডা. সাবরিনা স্বাভাবিক ছিলেন। তবে মাঝে মধ্যে তাকে কিছুটা বিচলিত দেখা গেছে। রাতে পুলিশের দেওয়া খাবারই খেয়েছেন। তবে হাজতখানায় থাকার সময় পরিবার বা স্বজনদের কেউ দেখা করতে কিংবা খোঁজখবর নিতে আসেননি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উদ্ধর্তন এক কর্মকর্তা সোমবার দুপুরেবলেন, ডা. সাবরিনাকে থানা হেফাজতে আনার পর উইম্যান এন্ড চাইন্ড কেয়ারে তিনজন নারী কনসটেবলের দায়িত্বে রাখা হয়। বাইরের কাউকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। এমনকি কোনও অফিসারও না। সিনিয়র অফিসাররা সবসময় তদারকি করেছেন। থানাহাজতে তিনি (সাবরিনা) স্বাভাবিকই ছিলেন। রাতে পুলিশের দেওয়া খাবারই খেয়েছেন। ঘুমিয়েছেনও। সকালে নাস্তা করিয়েই তাকে কোর্টে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বামী আরিফ চৌধুরীর মতো সাবরিনা চৌধুরী থানার হাজতখানায় কেনো অনাকাঙ্খিত বা অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দেননি। আরিফ যেমন থানা হাজতে থাকার সময় পুলিশের কাছে ইয়াবা চেয়েছিল, তিনি তা করেননি। তিনি ইয়াবা আসক্ত এমনটাও আমাদের মনে হয়নি। আর নেশার অভ্যাস থাকলেও সেটা তো একবারে বোঝা যায় না।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তটুকু জানতে পেরেছি তিনি (সাবরিনা) বাবার সঙ্গে শ্যামলিতে থাকেন। তবে থানা হেফাজতে থাকার সময় পরিবারের কেউ তার খোঁজখবর নেয়নি। একবার অবশ্য তার গাড়ির চালক থানায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা তাকে গেট থেকে ফিরিয়ে দিয়েছি।
পূবপশ্চিম
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন