বাগেরহাটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে বাবা-ছেলে ও প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার রাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বাগেরহাট সদরে একজন এবং ফকিরহাট উপজেলায় তিনজনের মৃত্যু হয়। এই মৃত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করা হয়েছে।
তারা হলেন- বাগেরহাট জেলা কমান্ডেন্টের কার্যালয়ের (আনসার ভিডিপি) সহকারী জেলা কমান্ডেন্ট মো. মিজানুর রহমান (৪৫)। এই কর্মকর্তার বাড়ি বরিশালে। ফকিরহাট উপজেলার মানসা বাহিরদিয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের বাবা পল্লী চিকিৎসক ইয়াদ আলী (৬০) ও তার ছেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা খান জাহান আলী (২৪) এবং একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সদস্য আব্দুস সালাম (৫৫)।
এদিকে, বাগেরহাটে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে বাগেরহাট জেলায় ৩১০ জনের করোনা শনাক্ত হলো।
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচ এন্ড এফপিও) ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার সকালে এই প্রতিবেদককে বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ইয়াদ আলীর পরিবারের ছয় সদস্যের মধ্যে চারজনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়। গত ৬ জুলাই ওই পরিবারের সবার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। ১১ জুলাই ল্যাবের পরীক্ষায় ইয়াদ আলীর পরিবারের চারজনের করোনা শনাক্ত হয়।
পল্লী চিকিৎসক ইয়াদ আলী ও তার ছেলে খান জাহানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের খুলনার কভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে বাবা ও বিকেলে ছেলে মারা যায়। অন্যদিকে ফকিরহাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশের সদস্য আব্দুস সালাম নামে ব্যক্তি করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করা হয়েছে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) মো. বেলফার হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের মুণিগঞ্জ এলাকার আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের সহকারী জেলা কমান্ডান্ট মো. মিজানুর রহমানকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। তাই তার মৃত্যুর কারণ জানতে তার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার পর তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
বাগেরহাট জেলা কমান্ডেন্টের কার্যালয়ের (আনসার ভিডিপি) জেলা কমান্ডেন্ট নাহিদ হাসান এই প্রতিবেদককে বলেন, সহকারি জেলা কমান্ডেন্ট মো. মিজানুর রহমান আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের ব্যারাকে একাই থাকতেন। গত কয়েক ধরে তিনি জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমা রোগে ভুগছিলেন।
তিনি হাসপাতালে না গিয়ে ব্যারাকে বসেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শনিবার বিকেলে হঠাৎ তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে আমরা তাকে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে। শ্বাসকষ্ট ছাড়াও তার ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ ছিল। এই কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি বরিশালে। তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন