চট্টগ্রামে ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত ৯০ বছর বয়সী কালুরঘাট সেতু সংস্কারের প্রয়োজনে ২৩ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত ১০ দিন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। দীর্ঘদিনের পুরনো সেতু হওয়ায় প্রতিবছর কয়েক দফায় সেতুটি মেরামত করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
শুক্রবার (১০ জুলাই) রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাদেকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমের কারণে সেতুটির বিভিন্ন অংশ জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এ কারণে আগামী ঈদুল আযহার আগে সেতুটির ভাঙাচোরা অংশ মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকাকালীন সময়ে বিকল্প পন্থায় যানবাহন চলাচলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে সাদেকুর রহমান বলেন, কালুরঘাট সেতুর মেরামতের জন্য টেন্ডার হয়েছে। তাই ১০ দিন কালুরঘাট সেতুর ওপর যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
প্রসঙ্গত, মেয়াদোত্তীর্ণ ৯০ বছর বয়সী এই সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি ও ভোগান্তি মাথায় নিয়ে প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ চলাচল করে। বোয়ালখালী ও পটিয়ার তিন ইউনিয়নের প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই সেতুর ওপর সরাসরি নির্ভরশীল।
এ ছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটের গাড়িও এই সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করে থাকে। সেতুর পূর্ব পাড়ে বোয়ালখালী অংশে প্রায় ৫০টি কলকারখানা রয়েছে। সেতু নড়বড়ে হওয়ায় এসব কারখানার পণ্য পরিবহন করতেও সমস্যা হয়।
এক নজরে কালুরঘাট সেতু
কালুরঘাট সেতু কর্ণফুলী নদীর উপর প্রতিষ্ঠিত। প্রাগৌতিহাসিক যুগ হতে নদী পারাপারের জন্য স্থানটি কালুর ঘাট নামে নদী পারাপারে ভূমিকা রেখে আসলেও ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে এ রেল সেতুটি নির্মিত হয়। স্থানীয় ভাবে কালুরঘাট সেতুটি কালুরঘাটের পোল নামে বহুল পরিচিত। এটি কর্ণফুলী নদীর দ্বারা দ্বিখন্ডিত বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলাকে উত্তর ও দক্ষিণাংশে সংযুক্ত করে। ৯০ বছরের পুরাতন এ সেতুটি দক্ষিণাংশের একমাত্র সংযোগ মাধ্যম ছিল শাহ আমানত কর্ণফুলী সেতুর উদ্বোধনের পূর্ব পর্যন্ত। তাই একে দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বারও বলা হয়।
১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বার্মা ফ্রন্টের সৈন্য পরিচালনা করার জন্য কর্ণফুলী নদীতে সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়। ফলে ১৯৩০ সালে ব্রুনিক অ্যান্ড কোম্পানি সেতু বিল্ডার্স হাওড়া নামক একটি সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করে। মূলত ট্রেন চলাচলের জন্য ৭শ গজ লম্বা সেতুটি সে বছর ৪ জুন উদ্বোধন করা হয়। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পুনরায় বার্মা ফ্রন্টের যুদ্ধে মোটরযান চলাচলের জন্য ডেক বসানো হয়। দেশ বিভাগের পর ডেক তুলে ফেলা হয়। পরে ১৯৫৮ সালে সব রকম যানবাহন চলাচল যোগ্য করে সেতুটির বর্তমান রূপ দেওয়া হয়। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতুটির রয়েছে ২টি এব্যাটমেট, ৬টি ব্রিক পিলার, ১২টি স্টীলপিলার ও ১৯টি স্প্যান।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন