টঙ্গীর দত্তপাড়া লেদু মোল্লা রোড এলাকায় অপহরণ করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে ৩ যুবককে ৮ দিন ধরে আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পাশাপাশি ওই তিন যুবককে বৈদ্যুতিক শক দেয় অপহরণকারীরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত ৩ যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত মুন্নাকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার মূল হোতা টঙ্গীর ‘পাপিয়া’ খ্যাত পূর্ব থানা যুব মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী শিল্পী আক্তার (৩৫) ও কথিত সাংবাদিক শাওন সরকার পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৩-৪ মাস পূর্বে ঘটনার মূল আসামি শিল্পী আক্তারের বাসায় স্বর্ণ চুরির মিথ্যে অভিযোগে গত ২ জুলাই জালাল (৩৫), খোকন (৩৫) ও রনি (২৬) নামের ৩ নিরীহ যুবককে তাদের বাসা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে সহযোগী কথিত সাংবাদিক শাওন সরকারের বউ বাজারস্থ গোপন আস্তানায় নিয়ে যায়। সেখানে একদিন আটক রেখে বেধড়ক পিটিয়ে তাদের সাথে থাকা নগদ টাকা ও মুঠোফোন লুটে নেয় অপহরণকারীরা।
আপহৃত তিন যুবককে উদ্ধার
পরে হুমকি দিয়ে জালালের বাবার কাছ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা আদায় করে এ চক্রের সদস্যরা। এসময় তারা অপহৃতদের অমানুষিক নির্যাতনের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক শকও দেয়। পরবর্তীতে অপহরণকারী চক্রটি অপহৃতদের ওই স্থান থেকে সরিয়ে শিল্পী আক্তারের নিজ বাড়ি দত্তপাড়ায় নিয়ে যায় এবং অপহৃতদের স্বজনদের কাছে আরও ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
বিষয়টি পুলিশ কিংবা অন্য কোন ব্যক্তিকে জানালে তাদের হত্যা করে মরদেহ স্বজনদের উপহার দিবে বলেও জানায় অপহরণকারী চক্রটি। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা নিরুপায় হয়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই শাহিন মোল্লাসহ একদল পুলিশ শিল্পী আক্তারের তিন বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে অপহৃত ওই তিনজনকে উদ্ধার করে। এসময় অপহরণকারী মুন্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনার মূল হোতা শিল্পী আক্তার ও শাওন সরকার পালিয়ে যায়। এঘটনায় অপহৃত খোকনের স্ত্রী নিলুফা বেগম বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি অপহরণ মামলা (নং-১৮) দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃতকে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভের সাথে জানায়, ইতিপূর্বে সারাদেশে আলোচিত যুব মহিলালীগ নেত্রীসহ অনেক উচ্চপর্যায়ের লোকদের সাথে বেশ সখ্যতা রয়েছে টঙ্গীর ‘পাপিয়া’ খ্যাত শিল্পী আক্তারের। এ সুবাদে যুব মহিলালীগের নাম ভাঙিয়ে নিরীহ লোকদের জিম্মি ও অপহরণ করে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত সে। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ট। এ ঘটনায় এলাকায় রাজনৈতিক নেতৃবৃৃন্দের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে জনমনে অনেকটা স্বস্তি ফিরে আসে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পূর্ব থানার (ওসি) মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারের জন্য জোর চেষ্টা চলছে। শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন