রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. শাহেদকে ধরতে উপর মহল থেকে র্যাবের প্রতি কোনও ‘বাধা বা চাপ নেই’ বলে জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেশাদারিত্ব এবং দায়িত্ববোধের চাপ আছে বলে জানান তিনি।
এই র্যাব কর্মকর্তা জানান, শাহেদকে ধরতে র্যাবের সব ধরনের অভিযান অব্যাহত আছে। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে র্যাবের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় র্যাবের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
শুক্রবার (১০ জুলাই) দুপুরে ব্রেকিংনিউজের সঙ্গে আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘শাহেদকে গ্রেফতার না করতে উপর মহল থেকে র্যাবের প্রতি কোন বাধা বা চাপ নেই। অবশ্য একটা চাপ আছে, সেটা হলো- আমাদের পেশাদারিত্বের এবং দায়িত্ববোধের চাপ। সেই চাপ থেকেই আমরা তাকে ধরতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আজ সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেমনটি বলছিলেন যে, শাহেদকে যেকোনোভাবে গ্রেফতার করা হবে। তেমনটিই আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একমত হয়ে বলতে চাই, যেকোনোভাবে আমরা শাহেদকে গ্রেফতার করবো। তাজে গ্রেফতারে আমাদের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে।’
এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শাহেদের বাবা সিরাজুল করিম বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। তিনি রাজধানীর মহাখালীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আজ তার জানাজা ও দাফন ঘিরে র্যাবের গোয়েন্দারা কাজ করছে বলে জানান আশিক বিল্লাহ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহেদ যত ক্ষমতাবানই হোন না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। সে যে কাজ করেছে শাস্তি তাকে পেতেই হবে।’
এ সময় শাহেফকে গ্রেফতারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুঁজছে তাকে। তবে তারও উচিত সারেন্ডার করা।
করোনা টেস্ট না করে ফলাফল দেয়া, লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করে দেয় র্যাব। সোমবার র্যাবের একটি দল সেখানে অভিযান চালালে প্রথমে বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ে। এদিন প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাহেদের একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। জব্দ করা গাড়িতে ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্টিকার লাগানো ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনের চোখে ধুলো দিতেই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্টিকার ব্যবহার করা হতো।
পরদিন সন্ধ্যায় হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে তার আগেই র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত উত্তরা ও মিরপুরে হাসপাতালটির দুটি শাখা সিলগালা করে দেয় এবং ওইদিন রাতেই উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে র্যাব।
মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. শাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে রিজেন্ট চেয়ারম্যান সাহেদসহ ৯ জনকে পলাতক হিসেবে দেখানো হয়। এখন পর্যন্ত মামলায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে মামলার অন্যতম আসামি শাহেদের অন্যতম সহযোগী ও প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে রাজধানীর নাখালপাড়া থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। তার কাছ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে র্যাব সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বৃহস্পতিবার ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। দেশত্যাগের আশঙ্কা থেকেই এই চিঠি দিয়েছে ডিএমপি।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন