সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তানজিলা খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ওই গৃহবধূর জীবনের মূল্য নির্ধারণে সালিসী বৈঠক হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষের মধ্যে সমাধান না হওয়ায় গৃহবধূর লাশটি প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে বাড়িতেই পড়ে ছিলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই ইউনিয়নের নওখাদা গ্রামের রেজাউল করিমের মেয়ে তানজিলার সাথে লালুয়ামাঝিড়া গ্রামের মোজদার হোসেনের ছেলে বাবুল হোসেনের (২৮) সাথে এক বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পরেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। যা নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীতে ঝগড়া বিবাদ মারপিটের ঘটনা চলে আসছিল। এরই জের ধরে গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের লালুয়া মাঝিড়া গ্রামের লালুয়া পাড়ায় বাবুলের স্ত্রী তানজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।
এদিকে তাঁর স্বামীর বাড়ির লোকজন তানজিলার মৃত্যুকে আত্মহত্যা বললেও তানজিলার বাবা রেজাউল করিম অভিযোগ করে বলেন, তাঁর মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এনিয়ে বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে তানজিলার লাশ বাড়িতে রেখেই তার শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের সাথে তানিজলার বাবার বাড়ির লোকদের থানা পুলিশকে না জানিয়ে লাশ দাফন নিয়ে এক সালিসী বৈঠক শুরু হয়। ওই গ্রামের এক গ্রাম্য প্রধান ফরজ আলীর বাড়িতে প্রায় রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এনিয়ে বৈঠক চলে।
স্থানীয়রা আরো জানান, ওই সালিসী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আছালত হোসেন, মেয়ে পক্ষের আত্মীয় শরীফ হোসেন, তোরাব আলী, গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুড়সহ আরো অনেকেই।
এদিকে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আছালত হোসেন সালিসী বৈঠক প্রসঙ্গে বলেন, মেয়ে পক্ষ ২ লাখ টাকা দাবী করেছিল। কিন্ত ছেলে পক্ষ গরীব হওয়ায় দেড় লাখ টাকা দিতে চাইলেও পরে ৫০ হাজার টাকা ব্যবধানের কারণে সালিসী বৈঠকে মিমাংসা হয়নি। কিন্ত লাশের খবর থানায় না জানানো প্রসঙ্গে ওই ইউপি সদস্য আরো বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের সব জায়গায় যেতে হয়।
অপরদিকে তাড়াশ থানার ওসি মাহবুবুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ সময় পরে বৃহস্পতিবার সকালে গৃহবধূর শ্বশুড় তাড়াশ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। এরপর পরই গৃহবধূর বাবা তাকে জানান তিনি থানা এসে তাঁর মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার মামলা করবেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন