সন্দেহ নেই চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এধরনের সিদ্ধান্ত জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করেই নেয়া হয়েছে। কিন্তু ঘনবসতির এ দেশে তা কতটা সম্ভব এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
যারা প্রতিদিন সকালে বাসে ঠেলাঠেলি করে অফিসে যান তারা এখন বাসের অর্ধেক আসনে যাবেন ও অর্ধেক আসন খালি থাকবে এটা মেনে নিয়ে আচরণগতভাবে সহিষ্ণুতার পরিচয় দেবেন তা কতটা আশা করা যায়?
সঙ্গত কারণে বাসের অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখলে মালিকরা ভাড়া বাড়াতে চাচ্ছেন এবং এ বাড়তি ভাড়া এই করোনা সংকটে পড়ে আর্থিক দুর্দিনে যাত্রীদের পক্ষে মেটানো কিভাবে সম্ভব?
বেশ কিছুদিন লকডাউন থাকার পর তা আংশিক ও পর্যায়ক্রমে তুলে নেয়ার পর সবার চাহিদা পূরণে রাস্তায় যে হঠাৎ যাত্রীদের প্রচÐ চাপ হবে তার জন্যে অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা করা যায়নি বা হয়ত সম্ভবও নয়।
এরফলে ভীড় কিংবা ধৈর্যের সঙ্গে রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ গন্তব্যে যাওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে এক সময় তাড়া নাজেহালের মধ্যে পড়বেন। করেনাভাইরাস এভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তো আছেই।
এমূহুর্তে অসুস্থ ও গর্ভবর্তীদের অফিসে যেতে বারণ করা হয়েছে কিন্তু তারা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে চাইলে তখন কি হবে?
অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন প্রয়োজনে কার্ফিউ দিতে হবে। কেউ বলছেন এভাবে লকডাউন রেখে একটা দেশ বা অর্থনীতি চলতে পারে না।
রোববার থেকে সারাদেশে গণপরিবহন, ট্রেন ও লঞ্চের চলাচল শুরু হচ্ছে। আর সোমবার থেকে সড়ক পরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবহনমালিকেরা চালক ও সহকারীদের মাস্ক সরবরাহ করবেন। বাস ছাড়ার আগে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। আর এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ করবে বিআরটিএ, পুলিশ ও মালিকশ্রমিক সংগঠন। এ জন্য ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনালে তিনটি কমিটি কাজ করবে। এসব সিদ্ধান্ত কি বাস্তবায়ন আদৌ সম্ভব হবে?
সিদ্ধান্ত হয়েছে দূরপাল্লার বাসগুলো পথে কোথাও যাত্রী তুলবে না। তবে কেউ নামতে চাইলে নামানো হবে। যাত্রী নামার সময় কেউ উঠতে চাইলে সেই হাঙ্গামা কে সামলাবে?
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেছেন পুলিশ ও বিআরটিএর সহায়তায় তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।
আর যাত্রীরাও গন্তব্যে পৌঁছাতে গাড়িতে ওঠার সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। এটাই বাস্তবতা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন