'কয়দিন আগে মজিদের কাছ দিয়া টিন আইন্যা ঘরের চাল দিছি, আইজ হেই টিনও শ্যাষ। বইন্যায় মোর ঘর ভাইঙ্গা গ্যাছে, মুই এহন পোলা মাইয়া লইয়া কই থাকমু মোর সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে'।
টর্নেডোয় ঘর হারিয়ে এমন করে বিলাপ করে কান্না করছিলেন নাচনাপাড়া ইউনিয়নের জ্ঞানপাড়া গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ৪ সন্তানের জননী মোসা. রানী বেগম।
বুধবার (২৭ মে) দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ টর্নেডো লণ্ডভণ্ড করে দেয় রানী বেগমের একমাত্র মাথা গোঁজার ঠাঁই বসতঘরখানা। রানী বেগম, জাকির শরীফসহ অন্তত ১৫টা বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মুহূর্তের মধ্যে ২টি ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। এতে রানীর বসত ঘর ভেঙ্গে পুকুরে পরে যায়, আর প্রতিবেশী জাকির শরীফের ঘর উড়িয়ে অন্তত ২০ ফুট দুরে নিয়ে যায়। অল্পের জন্য প্রাণে রখা পায় জাকির শরীফ, স্ত্রীসহ ২ সন্তান।
এদিকে রানী বেগম ও শিশু সন্তান নিয়ে মাঠে মুগডাল তুলতে যাওয়ায় তারাও প্রাণ রক্ষা পায়। তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং ২ পরিবারে খাদ্য সামগ্রী, নগদ টাকা এবং ঘর মেরামতের জন্য ঢেউটিন দেন।
সরেজমিনে কথা হয় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাওয়া রানী বেগমের সঙ্গে। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, কয়দিন আগে ঘূর্ণিঝড় আম্পান গেছে তাতেও তার ক্ষতি হয়নি, কিন্তু এ টর্নেডোয় তার ঘর পুকুরে ফেলে দিয়েছে। ঘরের চালা থেকে পানি পরায় কয়েকদিন আগে এলাকার মজিদের কাছ থেকে ঢেউটিন এনে ঘর দিয়েছিলেন। আজ ঘরই পানিতে গেছে, এখন আমি ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোথায় যাবো।
তিনি আরও জানান, ৮ বছর আগে স্বামী ফেলে রেখে গেছে। ৩ মেয়ে ১ ছেলে নিয়ে থাকেন তিনি। খুব কষ্টে দিন যায়। অন্যের বাড়ি কাজ আর মুগডাল তুলে যে টাকা পায় তা দিয়েই সংসার চলে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফরিদ বলেন, টর্নেডোয়ে তার ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে পুকুরে পরে যায়। পরিষদের সাধ্য অনুযায়ী তাকে সব সময় সহযোগিতা করে আসছি।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমি সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে খাদ্য সামগ্রী নগদ টাকা এবং ঢেউটিন দিয়েছি। আরও সরকারিভাবে নিয়মানুযায়ী সহায়তা দেওয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন