উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে আকস্মিকভাবে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার কারণে প্লাবিত হয়েছে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, হারাগাছ ও পীরগাছা উপজেলার তিস্তা নদীর নিম্নাঞ্চল। এতে বাদাম ভ্ট্টুা ও পাটসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
গত সোমবার থেকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় স্থানীয় লোকজনের মাঝে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন আতঙ্ক। কয়েকটি গ্রামে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে নদীভাঙন।
মঙ্গলবার (২৬ মে) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের গাবুড়ার চর, চর ছাওলা ও শিবদেব চরসহ কয়েকটি গ্রামে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। এছাড়া ছাওলা ইউনিয়নের আমিনপাড়া, কামারের হাট, রামসিং ও জুয়ানের চরসহ প্রায় ১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চলের উঠতি ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
কৃষকরা জানান, চরাঞ্চলে কৃষকেরা বাদাম তোলা শুরু করেছিল। শতাধিক কৃষক বাদাম তুলে চরেই শুকোতে দিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ রাতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জমি থেকে তুলে রাখা সব বাদাম ভেসে যায়। এতে অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের চাষ করা বাদাম, পাট, আগাম মরিচ ও ভুট্টাসহ রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে গত কয়েক দিন ঝড়ো বাতাশসহ বৃষ্টি হয়েছে। সোমবার রাতেও কালবৈশাখীসহ প্রচুর বৃষ্টি হয়। এতে বৃষ্টির পানি ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। পানির তীব্রতা বাড়তে থাকায় নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। প্রতিবছর ভাঙনের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ক্রমেই পশ্চিম দিকে ধাবিত হচ্ছে। আবার বালু খেকোরা নদীতে জেগে উঠা চর অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করছে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নতুন নতুন এলাকায় ভাঙনের শঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
পীরগাছা উপজেলা জুয়ানের চর গ্রামের আব্দুর রহমান ও সাকের আলী বলেন, গত রবিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। রাতের মধ্যে চরাঞ্চলের ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। ভেসে যায় তুলে রাখা বাদাম।
চর ছাওলা গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও চর শিবদের গ্রামের নুরুল হক বলেন, আকস্মিকভাবে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে এতে বাদাম, ভুট্টা ও পাটসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে পীরগাছার চরাঞ্চলে বাদাম চাষ হয়েছে ১৫০ হেক্টর জমিতে। এছাড়া ভুট্টা এক হাজার ৯৫০ হেক্টর, পাট ৪০০ হেক্টর ও আগাম মরিচ ১০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
পীরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান বলেন, চরাঞ্চলে প্রায় ২০ হেক্টর জমির বাদাম পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। পাট ভ্ট্টুাসহ অন্যান্য ফসল পানির নিচে নিমজ্জিত হলেও পানি দ্রুত নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন