দুর্যোগের সময়ও আমরা এমন অমানবিক কেন, প্রশ্ন ওসির
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকালে জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইনে কল পেয়ে হাসপাতাল থেকে মৃত সন্তানসহ বের করে দেয়া এক নারীর পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের ভয়ে হাসপাতালগুলোতে সাধারণ রোগীদেরও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সরকার থেকে সকল ধরনের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের জন্য হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের নির্দেশ দেয়া হলেও অনেকেই তা মানছেন না।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া তার ফেইসবুকে পোস্টে ওই অসহায় নারীকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন।
ওসি তার ফেইসবুক পোস্টে জানান, ‘জনৈকা নির্যাতিতা নারী। তার বর্ণনা অনুযায়ী শাশুড়ি এবং ভাশুরের চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে গত ৬ এপ্রিল রাত্রিবেলায় চট্টগ্রাম শহরের একটি হাসপাতালে প্রতিবেশীর সহায়তা নিয়ে ভর্তি হন। তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গভীর রাত্রে তার অপরিণত মৃত সন্তান প্রসব হয়। ভোরবেলায় ওই অপরিণত মৃত সন্তানসহ কোনো চিকিৎসাপত্র না দিয়ে চরম অমানবিক অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়।
এহেন পরিস্থিতিতে একটি অসম্পূর্ণ মৃত সন্তান নিয়ে রাস্তায় কোন যানবাহন এবং তার কোন সঙ্গী না থাকা ওই অসুস্থ নারী কি করবেন কোথায় যাবেন কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এরপর তিনি ৯৯৯ নম্বরে কল করে আমার সঙ্গে কথা বললে পাঁচলাইশ মডেল থানা থেকে একটি মোবাইল টিম পাঠাই। আমি কথা বলি দায়িত্বশীল পর্যায়ে। দীর্ঘ ৫-৬ ঘণ্টা একটানা চেষ্টার পর ওই নারীকে ওই হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি করা সম্ভব হয়। এই ৫/৬ ঘণ্টা ওই নারী পাঁচ মাসের অপরিণত মৃত সন্তান নিয়ে ওই হাসপাতালে দ্বারে দ্বারে ঘুরছিলেন, পাশে ছিল পুলিশ। আমরা তাকে সহায়তার চেষ্টা করছি।
ওসি তার ফেইসবুক পোস্টে বলেন, এমন ভয়ানক দুর্যোগের সময়ও আমরা এমন অমানবিক কেন??
হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনীহা জানিয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, অসহায় ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা চেষ্টা করতে হয়েছে। এরপর পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করান কর্তৃপক্ষ। ওই নারী স্বামী দিনমজুর। শ্বশুর বাড়ি সাতকানিয়ার উপজেলার ঢেমশা গ্রামে। আনুমানিক ২২ বছর বয়সী ওই নারী প্রথমবারের মতো স্বামীর বাড়িতে যান। কিন্তু শাশুড়ি ও ভাশুর মিলে তাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন