করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন, পুলিশ তাদের মধ্যে অন্যতম। এ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে ঘরবন্দি করে রাখাই একমাত্র উপায়। এজন্য পুলশের তৎপরতা ব্যাপক। তবু যেন পেরে উঠছে না পুলিশ।
পুলিশের গাড়ি দেখে সড়ক থেকে দৌঁড়ে পালানো, আবার গাড়ি চলে গেলে সড়কে উঠেই দাঁত বের করে খিলখিলিয়ে হাসা এখন নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তারপরও চেষ্টা থেমে নেই পুলিশের। সর্বোচ্চটুকু উজার করে সড়কে সড়কে টহল, নজরদারী বৃদ্ধি, লোক সমাগম প্রতিহত করা আর সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশব্যাপী কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।
এসব প্রচারণার মধ্যে থেকেই ভিন্ন কিছু বার্তার মাধ্যমে বাস্তবতা তুলে ধরে প্রচারণা চালাচ্ছে বরগুনা জেলা পুলিশ। বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে এমন কিছু বার্তা দিচ্ছে, যার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝতে সহজ হচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মানুষ।
সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এবং ঘরে থাকার উদ্দেশ্যে করা মাইকিংয়ে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীতে অত্যন্ত মহামারি আকার ধারণ করেছে। আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে খেয়াল করেছি, আমরা যখনই প্রচারণা এবং পুলিশি তৎপরতা শুরু করি আপনাদের ঘরে ফেরানোর জন্য, তখনই আপনারা পুলিশের গাড়ি দেখে রাস্তা ছেড়ে পালাচ্ছেন, বাজারের অলি-গলিতে পালাচ্ছেন, দোকান বন্ধ করে দোকানের ভেতরে পালাচ্ছেন।
মাইকিংয়ে তিনি আরও বলেন, পুলিশের গাড়ি চলে যাওয়া মাত্রই সুন্দর করে হাসি দিয়ে বিজয়ের বেশে আবার রাস্তার উপর চলে আসছেন। আপনাদের এ দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে, পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে অনেক ভালো কিছু করে ফেলেছেন। কিন্তু জেনে রাখবেন, পুলিশকে ফাঁকি নয়, মূলত আপনি নিজেকে ফাঁকি দিচ্ছেন। আর এর মাধ্যমেই আপনি করোনা নামক এই মহামারি যমদূতের খুব কাছে চলে যাচ্ছেন।
সাধারণ মানুষকে অনুরোধ জানিয়ে করা মাইকিংয়ে পুলিশ কর্মকর্তা শাহজাহান আরও বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আপনার পরিবার, দেশ এবং জাতিকে রক্ষার জন্য ঘরে অবস্থান করুন। এ করোনা যুদ্ধে সরকার যেন বিজয়ী হতে পারে এবং সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা করা যায়, এজন্যই আপনারা ঘরে থাকুন। আপনারা ঘরে থাকলেই এ যুদ্ধে আপনাদের সরাসরি অংশগ্রহণ করা হবে।
বরগুনার বটতলা এলাকায় এ পুলিশ কর্মকর্তার মাইকিং থেকে ভিন্ন এবং ব্যতিক্রমী বার্তা শুনে আমিনুল নামের একজন জাগো নিউজকে বলেন, করোনায় সতর্কতা ও সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আমি অনেক মাইকিং শুনেছি। কিন্তু এই পুলিশ কর্মকর্তার মাইকিংয়ে অনেক ভিন্ন বার্তা আছে। যা শুনে আমি ঘরে থাকতে অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমি আর অহেতুক বাসার বাইরে বের হবো না।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন বলেন, বরগুনার সব মানুষকে ঘরে রাখতে আমরা দিনরাত চেষ্টা করে যাচ্ছি। তারপরও কিছু মানুষের অসচেতনতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড আমাদের চিন্তিত করে তুলেছে।
তিনি আরও বলেন, বরগুনার এখন পর্যন্ত কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। তাই আমাদের এখনও সুযোগ আছে এ জেলার সবাইকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার। এজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন