রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দির ধারণ ক্ষমতা ১ হাজার ৪৫০ জন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাজতি ও কয়েদী মিলে ছিলেন ৩ হাজার ৪০০ জন। এর মধ্যে বর্তমানে ৩৫ জন বন্দিকে কারা কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। ফলে বন্দিদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কারা কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, মার্চের শুরুতে বন্দি কিছুটা কম ছিল। বর্তমানে আদালতে জামিন শুনানি বন্ধ রয়েছে। তবে প্রতিদিনই আসামি গ্রেফতার হচ্ছে। তাদেরও পাঠানো হচ্ছে কারাগারে। এতে কারাগারে বেড়ে গেছে বন্দির সংখ্যা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে যে ওয়ার্ডে ৫০ জন বন্দি থাকার কথা সেখানে গাদাগাদি করে থাকেন অন্তত ১২০ জন। চাপাচাপি করে ও গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে তাদের ঘুমাতে হয় রাতে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলছেন, সেখানে কারাগারে এটি নিশ্চিত করার কোনো ব্যবস্থাই নেই। এই বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে কারা কর্তৃপক্ষকে।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন বলেন, কারাগারে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত কঠিন কাজ। কোনোভাবে একজন আক্রান্ত ব্যক্তি কারাগারে চলে আসলে পরিস্থিতি যে কী হবে সেটা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, করোনা নিয়ে আমরা যদিও সতর্ক আছি; বন্দিদের সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করছি। সময় মতো গোসল, হাত ধোয়া; এগুলো আমরা নিশ্চিত করেছি। পাশাপাশি নতুন বন্দি এলে কারা ফটকেই চিকিৎসক দিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে এটি সাময়িক ব্যবস্থামাত্র।
এ দিকে রাজশাহী মহানগর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আবুল হাশেম জানান, আদালতে বিচারক আছেন। ছোটখাটো যে সব মামলার জামিন গ্রেফতারের পরই সম্ভব তাদের জামিন দিচ্ছেন। কিন্তু বড় মামলার আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন আরও বলেন, আদালতে জামিন শুনানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে আগে কয়েকদিনে ৪০০ বন্দির জামিন হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিনই কোনো না কোনো কয়েদীর সাজার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে। তারপরও কারাগারে ধারণ ক্ষমতার বেশি বন্দি রয়েছে। এ সব বন্দি নিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে বড় ঝুঁকি থাকছেই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন