করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নির্ভুল ও স্বচ্ছ তথ্য নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন দেশের ৮৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক। বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ দাবি করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৮ মার্চ সরকারি দফতর জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নির্মূল ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর ঘোষণা দিয়ে দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কথা নিশ্চিত করেছে। আইইডিসিআর এখন পর্যন্ত জনগণকে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত তথ্য অবহিত করে আসছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, আইইডিসিআর প্রদত্ত তথ্যাদি নিয়ে মানুষের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন ও সন্দেহ জাগতে শুরু করেছে। তার কারণ দফতরটির ব্রিফিংয়ে দেয়া তথ্যের সঙ্গে মানুষের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার অমিল; এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোর সঙ্গে ব্রিফিংয়ে প্রদত্ত তথ্যও পার্থক্য চোখে পড়ার মত উদ্বেগজনক। উপরন্তু, ব্রিফ্রিংটিতে তথ্য যাচাই ও ব্যাখ্যা চাইবার কোনো সুযোগ নেই; যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিকে ক্ষুন্ন করে বলে আমরা মনে করি।
বিবৃবিতে আরও বলা হয়েছে, আমাদের দেশে দুর্যোগে মানুষের মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সরকারি এবং সরকার বহির্ভূত মহলের হিসাবের মধ্যে ব্যাপক গরমিল পাওয়া যায়। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময়ও আমরা এমন সম্ভাব্য গরমিল, ব্যাখ্যার ভিন্নতা এবং রোগের উপসর্গকে মৃত্যুর কারণ হিসাবে উপস্থাপন করার প্রবণতা লক্ষ করছি। এমনকি একাধিক ক্ষেত্রে হাসপাতালগুলোতে রুগীকে ফিরিয়ে দেয়ার গুরুতর ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন ও নিরাপত্তাহীন বোধ করছি।
পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আশঙ্কা করোনা ভাইরাস থেকে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর যে হিসাব দেয়া হচ্ছে, প্রকৃত হিসাব তার চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পার।
বিবৃতিতে তারা বলেন, বিদেশ প্রত্যাগত মানুষজনসহ বিপুলসংখ্যক মানুষের গণস্থানান্তর, সঙ্গনিরোধ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে শিথিলতা, এবং নমুনা পরীক্ষার অপ্রতুলতার কারণে সংক্রমণের সঠিক চত্রি আমরা পাচ্ছি না। একইসঙ্গে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে দুর্বলতায় মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আক্রান্ত ও মৃতের বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি হিসাবে ব্যাপক পার্থক্য জনগণকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নমুনা পরীক্ষা এবং মূল্যবান চিকিৎসা প্রদানকেও উপেক্ষা করার পরিবেশ তৈরি করবে বলে আমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। তাই অনতিবিলম্বে সব মৃত্যুর কারণ ও প্রকৃত সংখ্যা স্বচ্ছভাবে জনগণের নিকট প্রকাশ করার দাবি করছি আমরা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন - রাজনীতিবিদ ও লেখক বদরুদ্দীন উমর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আকমল হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, আলোকচিত্রী ও লেখক শহিদুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনু মুহাম্মদ, মানবাধিকার কর্মী শিরীন প. হক,
গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, গবেষক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা ,
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীব সারা হোসেন,নারী অধিকার আন্দোলন কর্মী ফরিদা আক্তার, হাসিবুর রহমান, রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, রোবায়েত ফেরদৌস শিক্ষক, ডা. হারুনুর রশীদ, আফরোজা ইসলাম, আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন, মাহমুদুল সুমন, ড. ফাহমিদুল হক প্রমুখ।
শীর্ষ নিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন