ময়মনসিংহের নান্দাইলে ইসলামের অবমানার অভিযোগে লক্ষণ চন্দ্র সিংহ (৪৮) নামে এক পল্লী চিকিৎসকে গত সোমবার গভীররাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত লক্ষণ উপজেলার সিংরুইল গ্রামের শিং পাড়া গ্রামের মাখন চন্দ্র সিংয়ের ছেলে। এ ঘটনার পর থেকে ওই গ্রামে অতিরিক্তি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ময়মনসিংহ-৯ নান্দাইল আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে সকলকে শান্ত থাকতে অনুরোধ করেন।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থল দিলালপুর বাজারে গিয়ে জানা যায়, লক্ষণ পেশায় প্রাণী চিকিৎসক। বাজারে তাঁর একটি দোকান রয়েছে। তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে গরুর চিকিৎসা ছাড়াও কবিরাজি চিকিৎসা করে থাকেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, লক্ষণ প্রাণী চিকৎসার পাশাপাশি দিলালপুর বাজারের নির্জন স্থানের একটি ঘরে বসে নারীদের কবিরাজি চিকিৎসা করেন। বাজারের পল্লী চিকিৎসক মো. নুরুল ইসলাম জানান, এক নারী রোগী চিকিৎসা শেষে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ইসলামকে অবমানার অভিযোগ তোলে। অভিযোগের ভিত্তিতে এলাকাবাসী ওই পল্লী চিকিৎসকের বিরুদ্ধ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাজারো লোক লক্ষণের ফাঁসি দাবি করে চারপাশ থেকে শ্লোগান দিচ্ছিল। এরই মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ দিলালপুর বাজারে এসে কৌশলে লক্ষণকে গ্রেপ্তার করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় লক্ষণের দোকানটি ভাঙচুর করা হয়। দিলালপুর বাজার থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত লক্ষণের বসতঘর ও তাঁর কাকা রতন চন্দ্র সিংহর বসতঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
রতন জানান, তিনি মিষ্টির ব্যবসা করেন। লক্ষণ অপরাধী হলে তাঁর বিচার করা হউক। কিন্তু আমি তো কোনো দোষ করিনি। তাহলে আমার সহায় সম্বল আগুন কেন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হলো।
বাজারের একটি বিপণি বিতানের ব্যবস্থাপক মো. রাজন জানান, লক্ষণ তাঁর মার্কেটে দোকান ভাড়া নিয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রাণী চিকিৎসার পাশপাশি নারীদের নিয়ে বিতর্কিত চিকিৎসায় লিপ্ত ছিলেন। পরে তিনি লক্ষণকে বিপজ্জনক ব্যক্তি মনে করে তাঁর মার্কেট ছাড়তে বলেন।
এ বিষয়ে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহাম্মদ জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন