করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি সহায়তা বন্টন নিয়ে অসন্তোষ শেরপুরের শ্রীবরদী এলাকায়। সেখানে দরিদ্র অসহায় পরিবারের অনেকে ত্রাণ সহায়তা চেয়েও পাচ্ছেন না। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার তালিকায় নাম তুলতে টাকা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ মিলেছে। সেক্ষেত্রে নিরপেক্ষভাবে তালিকা যাচাইয়ের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার গোসাইপুর ইউনিয়নের ধাতুয়া গ্রামের বাসরী বেগম (৮০)। তিনি বলেন, ’আমগরে কিছুই নাই। আমি মানষের বাইত চাইয়া খাই। অহন দেশে কি আইলো। মানষের বাইততো যাওন যায়না। না খাইয়া কয়দিন থাহুম?’ তিনি সরকারি সহায়তা পাননি বলে জানান। স্বামী অসুস্থ, প্রতিবন্ধী ও দিনমজুর দুই ছেলে থাকেন আলাদা। এ অবস্থায় তিনি পড়েছেন চরম বিপাকে।
একই গ্রামের অন্ধ আবু বক্কর (৫৫) আক্ষেপ করে বলেন, ’আমি ছোড পোলাডারে লইয়া ভিক্ষা করি। সরহার আমগোর লাইগা সাহায্য দিছে। আমরা পাইনা। মেম্বারকে কত কইলাম। কিছুই দিলোনা।’
ধাতুয়া গ্রামের প্রতিবন্ধী কালাম মিয়া বলেন, ’সাহায্য চাইলে মেম্বাররা ট্যাহা চায়। আমরা ট্যাহা দিতে পারিনা। এর লাইগা আমগরে কিছুই দেয় না।’
গোসাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সাইদুর রহমান জানান, করোনা পরিস্থিতিতে সহায়তা হিসেবে এই ইউনিয়নে ৩৫০ জনকে ১০ কেজি চালের সাথে ডাল, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, আলু ও সরিষার তেল দেয়া হচ্ছে।
অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান জুবায়েল আহমেদ বলেন, ’সবচেয়ে গরিব লোকদের মাঝে এসব সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। বণ্টনে স্বচ্ছতার জন্য তদারকি করছেন উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা আক্তার বলেন, ’করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন ও গৃহবন্দী হতদরিদ্রদের মাঝে বরাদ্দকৃত চাল ও অর্থ বিতরণ করা হচ্ছে। তিন দফায় উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার জন্যে ৩৯ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বণ্টনের বিষয় প্রতিদিন মনিটরিং করা হচ্ছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন