করোনাভাইরাস বাংলাদেশে এখনো মহামারী আকার ধারণ করেনি। আইইডিসিআর এখনো সীমিত সংখ্যক মানুষ আক্রান্তের খবরই বলছে। যদিও জনগণ এই সংখ্যাতত্ত্বকে বিশ্বাসযোগ্য নয় বলেই মনে করছে। কিন্তু করোনার কারণেই গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুরোপুরিই ভেঙে পড়েছে। সাধারণ জ্বর-কাশি তো নয়ই, হৃদরোগ বা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এখন ন্যূনতম চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, প্রায় অর্ধেক বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসাসেবা দেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে। চিকিৎসকদের অনেক প্রাইভেট চেম্বারও বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা এখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানের লোকজন এখন চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা সরকারের এখন পর্যন্ত কোনো নজরদারি নেই।
বাংলাদেশে ৮ মার্চ সর্বপ্রথম করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকে আস্তে আস্তে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য করোনা একটি ভীতিকর বিষয়ে পরিণত হয়। তারা তখন পারসোনাল প্রকেটশন ইকুইপমেন্ট বা পিপিই দাবি করেন এবং জানান পিপিই ছাড়া চিকিৎসা আসলেই অসম্ভব। এরপরই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সর্দিজ্বরের চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়।
আস্তে আস্তে এই ব্যাপ্তি বাড়ছে। এখন হৃদরোগ, অ্যাজমা রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে না। হাসপাতালগুলোতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে নামীদামী বেসরকারি হাসপাতালগুলো সীমিত আকারে তাদের চিকিৎসা চালাচ্ছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের নজিরবিহীন হয়রানি হচ্ছে।
শুধু বেসরকারি হাসপাতালই নয়, সরকারি হাসপাতালগুলোতেও এক ধরনের নীরব অবরোধ চলছে যেখানে সাধারণ রোগীদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না বলে জানা গেছে। ভূক্তভোগীরা বলছেন, অবিলম্বে যদি এই অবস্থার অবসান না হয়, তাহলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা কাঠামো ভেঙে পড়বে। ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া চিকিৎসার কারণে গুরুতর অসুস্থ রোগীরা প্রচণ্ড সংকটে পড়েছেন। শুধু করোনা নয়, করোনার পাশাপাশি এই স্বাস্থ্যসেবার সংকটের বিষয়টিতেও অনতিবিলম্বে নজরদারি দেওয়া উচিৎ বলে ভূক্তভোগীরা মনে করছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন