বাড়ি ফেরার পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) নিখোঁজ সেই শিক্ষার্থী আহসান হাবীব হামজাকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। পাঁচ দিন পর গত বুধবার রাতে হামজা নিজ বাড়িতে আসেন। পরে রাতেই হামজাকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দেওয়ান কৌশিক আহমেদ এবং হামজার পরিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিরাজগঞ্জ মডেল থানার ওসি দেওয়ান কৌশিক আহমেদ বলেন, বুধবার রাতে হামজাকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়। পরে তাকে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, কেন কোথায় ও কিভাবে নিখোঁজ হয়েছিল তাও জানতে চেয়েছে পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, হামজা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ণিমাগাতি ইউনিয়নের ফলিয়া গ্রামের মো. আব্দুল মোতালেবের ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শহীদ নাজমুল আহসান হলে থাকতেন তিনি। এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় হল থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহ কোতয়ালি থানায় ৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
হামজার পরিবার জানায়, হামজা গত বুধবার দুপুর ৩ টার দিকে তার বোনের ফোনে মেসেজ দেন। তিনি লিখেন- আমি ভালো আছি, কেউ যেন দুশ্চিন্তা যেন না করে। আমি বাড়িতে আসছি। পরে রাত ৮ টার দিকে হামজা বাড়িতে আসেন। পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করলে রাত ১০ টার দিকে হামজাকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
পরিবার সূত্র জানায়, হামজা যখন কলেজে পড়ত তখন খেলতে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিল। এরপর থেকেই মাঝেমধ্যেই মানসিক সমস্যা দেখা দিত। এরপর থেকেই তাকে বিভিন্ন সময়ে মানসিক ডাক্তার দেখানো হয়।
গত দেড় মাস আগে ঢাকায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় তার পরিবার। এরপর থেকেই দেড়মাস ধরে মানসিক রোগের ওষুধ খাওয়ানো হয়। তবে হামজা নিজেকে সুস্থ মনে করতেন। মানসিক রোগের ওষুধ খেতে চাইতেন না তিনি। এই বিষয়েই অভিমান করে বাড়ির সাথে সবধরনের যোগাযোগ বন্ধ করেন বলে হামজা তার পরিবারকে জানিয়েছেন।
হামজা আরও জানান, তিনি বাড়ির সবার সাথে অভিমান করে চট্টগ্রাম চলে যান। পরে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিখোঁজ সংবাদ দেখে বুধবার দুপুরে বোনের ফোনে মেসেজ দেন এবং তিনি রাত ৮ টার দিকে নিজ বাড়িতে যান। পরে রাতে ১০ টার দিকে পুলিশ হামজাকে আটক করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে হামজার বাবা মো. আব্দুল মোতালেব বলেন, পুলিশ হামজাকে কোথায় নিয়ে গেছে এবং কোন থানায় তাকে রাখা হয়েছে এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানতে পারিনি। তার ব্যাপারে পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই সামিউল ইসলাম বলেন, হামজার বাড়ি থেকে আমাকে এ ব্যাপারে জানিয়েছে। আমি ওসি স্যারকে এ বিষয়ে অবহিত করেছি।
ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন