শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি এবং গৃহকর্মীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের দায়ে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষক রমজান আলীকে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির রিজেন্ট বোর্ড।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বোর্ডের ৪৯তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একই অভিযোগে এর আগে ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন এক ছাত্রী। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বাড়িতে স্ত্রীর অনুপস্থিতে রমজান আলী ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন অজুহাতে বাসায় যাওয়ার চাপ দেন। বাইরে হোটেলে থাকার চাপ দেন। এতে রাজি না হলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার হুমকি দেন রমজান আলী। প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি মোবাইলে কথোপকথনের রেকর্ডও জমা দেন ওই ছাত্রী।
পাশাপাশি ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে যৌতুক ও ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ দেন রমজান আলীর স্ত্রী। এ ঘটনায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তদন্তকালে কমিটির সদস্যরা ছাত্রী ও তার স্ত্রীর অভিযোগের সত্যতা পান। শুধু তাই নয়, রমজান আলীর বিরুদ্ধে গৃহকর্মীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেরও প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে ২০১৮ সালের ২ জুলাই কমিটির সদস্যরা প্রতিবেদন জমা দেন। একই সঙ্গে রমজান আলীকে চূড়ান্ত বরখাস্তের সুপারিশ করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
রমজান আলীকে চূড়ান্ত বরখাস্তের বিষয়ে মহিলা পরিষদের সভাপতি কানিজ রহমান বলেন, রমজান আলীর মতো একজন শিক্ষককে বরখাস্তের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি কলঙ্কমুক্ত হলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জানান, সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সহকারী অধ্যাপক ড. রমজান আলীকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত। পাশাপাশ কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারি হলেই সব জানা যাবে।
এ ব্যাপরে জানতে হাবিপ্রবির ভিসি, রেজিস্ট্রারসহ রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি কেউ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন