চুয়াডাঙ্গা শহরের হাসপাতাল সড়কের ‘উপশম নার্সিং হোম’-এ নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে প্রসূতি জিনিয়া খাতুনের কোলজুড়ে জন্ম নেয় একটি কন্যা শিশু। কিন্তু শিশুটি জন্ম নিলেও বাবা-মায়ের মুখে পড়ে হতাশার ছাপ।
সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। মৃত ভেবে কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে যখন প্যাকেটে ভরার প্রস্তুতি চলছিল ঠিক তখনই শিশুটি নড়ে উঠে জীবিত বলে জানান দেয়। এরপর তড়িঘড়ি করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নবজাতকটিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
সোমবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে শহরজুড়ে শুরু হয় চাঞ্চল্য।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের আবদুল হালিম ও জিনিয়া খাতুনের বিয়ে হয় কয়েক বছর আগে। এরই মধ্যে জিনিয়ার গর্ভে সন্তান আসে। তাকে নিয়মিত চেকআপ করতেন জেলা শহরের উপশম নার্সিং হোমের স্বত্বাধিকারী ডা. জিন্নাতুল আরা।
রোববার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে জিনিয়ার প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে নেওয়া হয় ডা. জিন্নাতুল আরার কাছে। সেখানে তার তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন জিনিয়া। ভোর ৪টার দিকে কন্যাসন্তান প্রসব করেন জিনিয়া খাতুন।
প্রসূতি জিনিয়া খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, রোববার বিকেলে প্রসব বেদনা উঠলে পরিবারের সদস্যরা আমাকে ডা. জিন্নাতুল আরার মালিকাধীন উপশম নাসিং হোমে ভর্তি করে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সিজার করার কথা জানানো হলেও সোমবার ভোরে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে আমার কন্যা সন্তান হয়। কিন্তু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ক্লিনিকের আয়া ও চিকিৎসকরা আমার মৃত কন্যা শিশু হয়েছে বলে জানায়। এরপর আমার কন্যাকে ক্লিনিকের মেঝেতে অযত্নে অবহেলায় ওপর রেখে দেওয়া হয়।
প্রসূতি জিনিয়ার মা কুলসুম বেগমের অভিযোগ, মৃত কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার খবরে আমরা দাফন কাফনের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি। তখন আমার মেয়ে তার কন্যাকে শেষবারের মতো দেখতে চাই। এরপর শিশুকে কোলে নিতেই নড়ে ওঠে শিশুটি। এ সময় আমাদের স্বজনদের আত্মচিৎকারে ডা. জিন্নাতুল আরা শিশুকে অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে গোপনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. জিন্নাতুল আরা বাংলানিউজকে বলেন, শিশুটি যখন জন্ম নেয় কথন একেবারেই শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল না। নাভির কাছে কেবল ঢিবঢিব শব্দ ছিল। চার ঘণ্টা অক্সিজেন দেয়ার পর সে কিছুটা সুস্থ হলে আমরা সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, সময় হওয়ার আগেই শিশুটি জন্ম নিয়েছে। তাকে ইনকিউবেটরের মধ্যে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আপাতত সে সুস্থ আছে। তবে এখনও সে ঝুঁকি মুক্ত নয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন