নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সরকার ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোশাররফ বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা দেখছি, আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের পার্লামেন্টে বাংলাদেশকে হেয়পতিপন্ন করা হচ্ছে। আজ সরকারের পররাষ্ট্রনীতি এতই নতজানু যে, এতই মেরুদণ্ডহীন যে তারা প্রতিবাদ করতে পারছে না। তাই সবকিছু থেকে একটি সমাধান আমাদের খুঁজতে হবে। অত্যাচার, অনাচার গুম-খুনসহ সকল কিছুর জন্য যারা দায়ী সেই স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশ আজ সামাজিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে কঠিন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে মানুষ চিন্তিত। স্বাধীনতার ৪৮ বছরে বাংলাদেশের এ রকম অবস্থা আর হয়নি।
মোশাররফ বলেন, আজ আমাদের অর্থনীতির ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। প্রায় ৯টি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে। চাপাবাজি করে এগুলোকে জনগণ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায়, সামাজিক ন্যায়বিচার ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। দেশে আইন নেই, আইনের শাসন নেই। দলীয়করণের কারণে বিচারব্যবস্থা আজ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে এই সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে শুধুমাত্র গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য। দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকলে নিম্ন আদালতেই বেগম খালেদা জিয়া জামিন পেতেন।
তিনি আরও বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের পক্ষে। আর এই সরকার গণতন্ত্রের বিপক্ষে। তাই এই দেশে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্ট শাসন বজায় রাখার জন্যই বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছে। বিচার বিভাগকে তারা সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে। বিচার বিভাগের কাঁধে বন্দুক ঠেকিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, তারেক রহমান নির্দোষ থাকার কারণে নিম্ন আদালতের বিচারক তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছিল। সেই কারণে সেই বিচারককে বাংলাদেশ থেকে জীবন নিয়ে পালাতে হয়েছে। এই পরিবেশ সৃষ্টি করে এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করতে হবে। অর্থাৎ এদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন