ফারুক হোসেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অস্থায়ী জুনিয়র অপারেটর (জিএসই শাখা)। অনিচ্ছাকৃত একটি দুর্ঘটনার জেরে বিমান কর্তৃপক্ষের নেওয়া সিদ্ধান্তে ফারুক হোসেনের জীবনে এখন নেমে এসেছে অন্ধকার।
গত বছরের ডিসেম্বরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গাড়ি (বেপ কোচ) চালাচ্ছিলেন ফারুক হোসেন। হঠাৎ ব্যাক গিয়ারে গাড়ি চলতে থাকায় পেছনে থাকা বিমানের অন্য একটি গাড়ির সামনের কাচটি ভেঙে যায়। এ ঘটনায় ফারুককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। গত ১৮ মার্চ ফারুককে দোষী সাব্যস্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। গাড়ির কাচ ভাঙার কারণে ফারুকের বেতন থেকে প্রতি মাসে ৮ হাজার টাকা কর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় তদন্ত কমিটি।
সেই মোতাবেক ৭২ মাস ধরে তার বেতন থেকে ৮ হাজার টাকা করে ৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা আদায় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে যা ইতিমধ্যেই কার্যকর করা শুরু হয়েছে। ফারুক সর্বসাকুল্যে বেতন পান ২০ হাজার টাকা। তদন্ত কমিটির চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত মানতে গিয়ে এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন তিনি।
জানা গেছে, দুর্ঘটনায় যে গাড়ির কাচ ভেঙে গেছে, তার ক্ষতিপূরণ বাবদ বাংলাদেশি টাকায় ৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা ধরা হলেও মাত্র ৪৩ হাজার ৭০০ টাকায় গাড়িটির ভাঙা কাচ মেরামত করেছে কর্তৃপক্ষ।
ফারুকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা বিমানের ম্যানেজার (জিএসই) তোফাজ্জল আকন্দ আমাদের সময়কে বলেন, যে গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি স্থায়ীভাবে মেরামত করা হয়েছে। ফারুকের শাস্তির বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
জানা গেছে, মা-বাবা আর স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে ঢাকায় থাকেন ফারুক হোসেন। তার ঘরভাড়া মাসিক ৮ হাজার টাকা। দুই সন্তানের শিক্ষা ব্যয় আর মা-বাবার চিকিৎসায় যখন গলদঘর্ম অবস্থা ফারুকের; ঠিক তখনই অনিচ্ছাকৃত এক দুর্ঘটনা আর কর্তৃপক্ষের জরিমানা আদায়ের সিদ্ধান্তে ভীষণ মুষড়ে পড়েছেন ফারুক হোসেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন