ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নয়াবাজার শাখার অ্যাকাউন্ট নম্বর ০১৩৬১১০০০০০১০৮৩৪। অজ্ঞাত উৎস থেকে এখানে জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১২২ কোটি ৫৭ লাখ ৪ হাজার ৮৬৯ টাকা।
এনু রুপন
শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর অ্যাকাউন্ট থেকে তড়িঘড়ি সরানো হয় প্রায় ১শ’ কোটি টাকা। কিন্তু প্রায় সাড়ে ২২ কোটি টাকা শেষ পর্যন্ত সরানো যায়নি। তলানিতে পড়ে থাকা এই অর্থ এখন আছে বাজেয়াপ্তের অপেক্ষায়।
তবে শুধু এই একটি অ্যাকাউন্ট নয়। এ রকম আরও ৮২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলছে দুই যুবলীগ নেতার নামে। এসব ব্যাংক হিসাবে তারা টাকা লেনদেন করেছেন কয়েকশ’ কোটি টাকা। আলোচিত দুই ভাই হলেন গেণ্ডারিয়া থানা যুবলীগের সহসভাপতি এনামুল হক ওরফে এনু ভুঁইয়া ও তার ছোট ভাই থানা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রুপন ভুঁইয়া।
তাদের অর্থসম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। ইতিমধ্যে দুই ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্র বলছে, এনু এবং রুপন ভুঁইয়া ঠিক কত টাকার মালিক তা হয়তো তারা নিজেরাও জানেন না।
কয়েকটি ব্যাংকে শত কোটি টাকার স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রাখার পর সেগুলোর খোঁজ নেয়ারও সময় পাননি তারা। সুদ-আসল মিলিয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে টাকার অঙ্ক। আবার বিপুল অঙ্কের নগদ টাকা কয়েকটি ব্যাংকের কারেন্ট অ্যাকাউন্টে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
শুধু কাঁড়ি কাঁড়ি নগদ টাকা নয়, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকাতে তাদের বাড়ি আর প্লটের সংখ্যা মেলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে সিআইডি। কারণ প্রাথমিক অনুসন্ধানেই যা পাওয়া গেছে তাতে হতবাক না হয়ে উপায় নেই। এখন পর্যন্ত এনু-রুপনের মালিকানাধীন ১৯টি বহুতল বাড়ি ও একাধিক প্লটের সন্ধান মিলেছে।
সিআইডি কর্মকর্তারা বলছেন, ক্যাসিনোর অন্ধকার জগৎ তাদের কাছে ধরা দেয় অনেকটা আলাদিনের চেরাগ হয়ে। দুই যুবলীগ নেতার দৃশ্যমান কোনো আয়ের উৎস নেই। কয়েকটি সাইনবোর্ডসর্বস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে তারা অর্থ লুকানোর চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর তাদের বাড়ি থেকে নগদ ৫ কোটি টাকা ও ৮ কেজি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে র্যাব। বর্তমানে তারা দু’জনেই পলাতক। গ্রেফতার এড়াতে তারা ভারতে আত্মগোপন করে আছেন এমন খবর দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র।
এনু এবং রুপন ভুঁইয়ার ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত দলিলপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, পুরনো ঢাকার কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় এনু ও রুপনের নামে একের পর এক হিসাব খোলা হয়। সবচেয়ে বেশি হিসাব খোলা হয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও স্ট্যান্ডান্ড চার্টার্ড ব্যাংকে।
বড় অঙ্কের অর্থ জমা রাখার কারণে ব্যাংকগুলো এনু-রুপনকে বিশেষ ব্যাংকিং সুবিধা দিতে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় মাতে। বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে এনু-রুপন ভিআইপি গ্রাহক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
ব্যাংক হিসাব বিবরণী অনুযায়ী অজ্ঞাত উৎস থেকে এনু-রুপনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে নিয়মিত বড় বড় অঙ্কের অর্থ জমা হয়। এভাবে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নয়াবাজার শাখায় সালমান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি অ্যাকাউন্টে (নম্বর ০১৩৬১১০০০১৬৯৮৬) জমা হয় ১৭ কোটি ৭৭ লাখ।
সিপলু কম্পিউটার নামে নয়াবাজার শাখার আরেকটি অ্যাকাউন্টে (নম্বর ০১৩৬১১০০০০০১৩১১০) জমা হয় ২৬ কোটি এবং এনু-রুপন স্টিল কর্পোরেশন নামে ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখায় (হিসাব নম্বর ০২১০১০০০০০০১২৯৬৩) জমা হয় ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৮০ হাজার।
এভাবে নিয়মিত কোটি কোটি টাকা জমা হয় এনু-রুপন স্টিল হাউসের নামে প্রাইম ব্যাংকের বংশাল শাখায় (হিসাব নম্বর ১২২৩১০৯০০০৭১৮৫), এনামুল হক এনু নামে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় (হিসাব নম্বর ০১২৭৯৩৭৩৩০১), ব্র্যাক ব্যাংকের নবাবপুর শাখায় (হিসাব নম্বর (ক্লাসিক) ১৫০২১০০৫৬০৯২৮০০১), এনু-রুপন স্টিল কর্পোরেশন প্রিমিয়ার ব্যাংকের বংশাল শাখায় (হিসাব নম্বর ০১১৯১১১১০০০০৮৬০৭) এনামুল হক এনু নামে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড গুলশান শাখায় (হিসাব নম্বর ০১৯১৬৮২৮১০) ও (হিসাব নম্বর ০২৯১৬৮২৮১০১)।
এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার যৌথ নামে স্ট্যান্ডাড চার্টার্ড ব্যাংকের কাকরাইল ক্যাশ অফিসে ভিআইপি সার্ভিস নামে একটি বিশেষ হিসাব খোলা হয় (নম্বর ১৮৩৬৭৯২৮৪০১)। এই অ্যাকাউন্ট থেকে বিদেশে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচার করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়া রুপন ভুঁইয়ার নামে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড মতিঝিল শাখায়ও একটি বিশেষ অ্যাকাউন্ট আছে। যার নাম দেয়া হয়েছে ভিআইপি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট (নম
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন