বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় এক শিক্ষার্থীকে সহায়তা করার জন্য বিতর্কিত সেই ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আজম ফাইনের সাথে এক শিক্ষকের যোগাযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষক লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাব্বির আহম্মেদ চৌধুরী। আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অনার্স প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার চতুর্থ শিফটে ‘এফ’ ইউনিটে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আজকের চতুর্থ শিফটে কবি হেয়াৎ মামুদ ভবনের ৪০৪ নম্বর রুমে পরীক্ষার দায়িত্ব পালনের সময় ওই শিক্ষককে মোবাইলে মেসেজ দেন ফয়সাল আজম ফাইন। তিনি একটি নম্বর থেকে ওই শিক্ষকের ব্যক্তিগত মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে বলেন স্যার, আমি ফয়সাল আজম ফাইন। আপনার রুমে এক ছোট ভাই পরীক্ষা দিচ্ছে। আপনার কথা বললাম। আসাদুজ্জামান নুর... নাম।’ বিষয়টি জানাজানি হলে সাব্বির আহমেদ চৌধুরী ওই রুমে ডিউটি করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
পরবর্তীতে ওই কক্ষটি তল্লাশি করে আসাদুজ্জামান নুর নামের ওই পরীক্ষার্থীকে পাওয়া যায়। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল ৬৪১০৭৭। সে মর্ডাণ মোড় এলাকার আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে। ওই পরীক্ষার্থী বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতা ফাইনের কর্মী বলেও জানা গেছে।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে ঘটনাটি জানিয়ে এফ ইউনিয়ের সমন্বয়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন শিক্ষক সাব্বির চৌধুরী। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আসাদুজ্জামান নুর নামের ওই পরীক্ষার্থীকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে এসে তার কাছে অবৈধ কিছু না পাওয়ায় অভিভাবকের কাছে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শিক্ষক সাব্বির চৌধুরী বলেন, পরীক্ষার হলে ঢোকার পরে অপরিচিত নম্বর থেকে মেসেজ আসে এবং বিষয়টি আমি সাব-কন্ট্রোল রুম এবং প্রক্টরকে জানাই। পরে এ ব্যাপারে সমন্বয়ককে লিখিত অভিযোগ দেই।
অভিযুক্ত ছাত্রনেতা ফাইনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মেসেজ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সে আমার পরিচিত ছোটভাই। ভালো ছাত্র। অসুস্থ ছিলো বলে স্যারকে দেখতে বলেছি। স্যারকে একবার ফোন দিলাম তিনি ফোন না ধরায় মেসেজ দিয়েছি। তবে পরীক্ষার্থী আসাদুজ্জামান অসুস্থ না এবং ফাইনের সাথে তার কোন যোগাযোগ ছিলো না বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
বেরোবি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই মুহিব্বুল বলেন, ওই পরীক্ষাথীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। এজন্য তাকে তার বাবার কাছে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাকে সার্বক্ষণিক ফয়সাল আজম ফাইনের সাথে দেখা যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) আতিউর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ওই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বাবাকে ডেকে তার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন