নওগাঁর পত্নীতলায় স্কুলের শিক্ষকদের অশোভনীয় আচরণের জন্য রাব্বি হাসান (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
রোববার সন্ধ্যায় গগণপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার স্কুলের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
নিহত রাব্বি উপজেলার ঘোষনগর ইউনিয়নের কোতালী গ্রামের আতোয়ার হোসেনের ছেলে।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, রোববার বিকালে রাব্বি মাকে সঙ্গে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করার জন্য বিদ্যালয়ে যান। সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে ফরম পূরণের জন্য প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ফরম পূরণ না করে স্কুল থেকে রাব্বি ও তার মাকে তাড়িয়ে দেন।
এরপর রাব্বি নিজ বাড়িতে ফেরার পথে কোতালী ব্রিজ এলাকায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় রাব্বিকে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাব্বির মৃত্যুর খরব ছড়িয়ে পড়লে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সোমরার সকাল থেকে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ করেন এবং প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন ও সহকারী প্রধান শিক্ষক বকুল হোসেনের বিচার দাবি করেন।
দুপুর ১২টায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ঘোষনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ বিষয়ে নিহত রাব্বির চাচা ফেরদৌস হোসেন অভিযোগ করেন, আমার ভাতিজা স্কুলে গিয়েছিল ফরম পূরণের করার জন্য। প্রধান শিক্ষক তাকে পরীক্ষা দিতে দিবে বলে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছে। এই অভিমান নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ব্রেন-স্ট্রোক করে মারা যায় রাব্বি। আমি দোষী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গগণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ঘোষনগর ইউপির চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, এ ধরনের মৃত্যু সত্যিই দুঃখজনক। ছেলেটি ২টি বিষয়ে টেস্ট পরীক্ষা দেয়নি। নিয়ম অনুযায়ী সে পরীক্ষা দিতে পারবে না। শিক্ষকরা সে বিষয়ে শিক্ষার্থীর মাকে জানিয়ে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোচাহাক আলি বলেন, ঘটনাটি প্রধান শিক্ষকের কাছে শুনেছি। পরিবারে পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
পত্নীতলা থানার ওসি পরিমল কুমার জানান, আমরা খবর পেয়ে গগণপুর উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিয়েছি। তবে স্কুলছাত্র রাব্বির কি কারণে মৃত্যু হয়েছে আমি সে বিষয়ে কিছুই জানি না। স্কুলের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আমাকে কিছুই বলেনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন