ঘূর্ণিঝড় বুলবুল'র প্রভাবে বাগেরহাটে বৃষ্টির তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বুলবুল'র প্রভাবে সুন্দরবনের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সুন্দরবনের দুবলা শুটকি পল্লীর ১৫ হাজার জেলেসহ সুন্দরবনের অবস্থানরত পর্যটকদের ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় জেলার ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, ১০টি মেডিকেল টিম, ১০টি কন্ট্রোল রুম ও জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এছাড়াও সভায় রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কয়েক শত স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় জনসাধারণকে সচেতন করতে জেলাব্যাপী মাইকিং শুরু করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ধেয়ে আসার খরবে বাগেরহাটসহ সুন্দরবনের উপকূলী এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই উপকূলসহ বাগেরহাটে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইতে শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। আছড়ে পড়ছে বিশাল-বিশাল ঢেউ। বইছে ঝোড়ো হাওয়া।
ঘূর্ণিঝড়ের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সুন্দরবনের দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পাশাপাশি বনের ভ্রমণে থাকা পর্যটকদের ফিনিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে সুন্দরবনের দুবলারচরে শুটকি পল্লীতে অবস্থারত ১৫ হাজার জেলেকে ফিরিয়ে আনতে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সঙ্গে সমস্বয় করে কাজ করছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রাস পূর্ণিমাকে সামনে রেখে ১০ নভেম্বর থেকে সুন্দরবনের আলোরকোলে শুরু হতে যাওয়া ৩ দিনব্যাপী রাস উৎসব বন্ধ ঘোষণা কর্তৃপক্ষ। সুন্দরবন বিভাগের সকল কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের নিরাপদ থেকে বণ্য প্রাণী রক্ষায় কাজ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় মোংলা সমুদ্র বন্দরে খোলা হয়েছে ৩টি কন্ট্রোল রুম। বন্দরে এ মুহূর্তে মেশিনারি, ক্লিংকার, সার, জিপসাম, পাথর, সিরামিক ও কয়লাসহ দেশি-বিদেশি মোট ১৪টি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। এসব জাহাজে পণ্য খালাসে বিশেষ সতর্কতা জারি করা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন