বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে আজও বিক্ষোভ করছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের চতুর্থদিনে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে আন্দোলনকারীরা আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, শুক্রবার দুপুর ২টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম তাদের ঙ্গে দেখা না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনে তালা দেওয়া হবে।
বুয়েট শহিদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন আবরার হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা।
কুষ্টিয়ায় আবরারের গ্রামের বাড়ির ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ ও ভিসির সমালোচনা করে শিক্ষার্থীরা বলেন, এখন পর্যন্ত ভিসি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি। এমনকি যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেও তার দেখা পাওয়া যায়নি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আবারও ১০ দফা দাবি এবং এগুলোর অগ্রগতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, একটি দাবি কিছুটা পূরণ হয়েছে। অন্যগুলো বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। শেরে বাংলা হলের প্রভোস্ট মৌখিক পদত্যাগ করলেও অফিসিয়ালি তিনি এখন পর্যন্ত পদত্যাগ করেননি।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, শিক্ষক সমিতি ও অ্যালামনাই আমাদের দাবির ব্যাপারে নীতিগত সমর্থন দিয়েছেন। তবে বুয়েট প্রশাসন কিছুই করেনি। দ্রুত মামলার প্রতিবেদন নিশ্চিত করতে হবে। বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ এবং আবাসিক হলে র্যাগের নামে নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
এর আগে অবস্থান নিয়ে বুয়েটে চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যে ১০ দফা দাবি করেছেন সেগুলো হলো-
১. সিসিটিভির ফুটেজ ও জিজ্ঞাসাবাদ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে শনাক্তকারী খুনিদের প্রত্যেকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. সিসিটিভি ফুটেজ থেকে শনাক্তকারী সবাইকে আসছে ১১ অক্টোবর বিকেল ৫টার মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।
৩. মামলা চলাকালীন খরচ এবং ফাহাদের পরিবারের সব ক্ষতিপূরণ প্রশাসনকে বহন করতে হবে। এই মর্মে অফিসিয়াল নোটিশ ১১ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে দিতে হবে।
৪. দায়ের করা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
৬. বুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রমসহ সব ছাত্র সংগঠন নিষিদ্ধ করতে হবে।
৭. বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হননি; ৩৮ ঘন্টা পর উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিরুদ্ধাচরণ করেন। বুধবার দুপুর ২টার মধ্যে ভিসি সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে জবাবদিহিতা করতে হবে।
৮. আবাসিক হলগুলোতে র্যাগিংয়ের নামে ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সব প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। এর সঙ্গে জড়িত সবার ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে।
৯. নিরাপত্তার স্বার্থে সবগুলো হলের প্রত্যেক ফ্লোরে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. শেরেবাংলা হল প্রভোস্টকে ১১ অক্টোবর বিকেল ৫টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন