মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রগতিশীল আন্দোলনের পথিকৃৎ ও ন্যাপ সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের টানেলে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকারের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
জানাজা শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষে তার সহকারী সামরিক সচিব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শ্রদ্ধা জানান।
জানাজায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সিপিবি সভাপতি মুহিদুল ইসলাম সেলিম, ব্যারিস্টার আমির-উল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুস সোবহান গোলাপ, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান উপস্থিত ছিলেন। সেখানে মরহুমের জীবনী পাঠ করেন ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন।
জানাজা পরিচালনা করেন সংসদ ভবন মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. সাইফুল্লাহ। জানাজা শেষে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মোজাফফর আহমেদকে গার্ড অফ অনার ও রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করা হয়। এ সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আওয়ামী লীগের পক্ষে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সভাপতি শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাত পরিচালনার সময় ইমাম মাওলানা মো. সাইফুল্লাহ একবারও মরহুম মোজাফফর আহমদের নাম উচ্চারণ করেননি। মোনাজাত শেষে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এ বিষয়ে ইমামের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আবার মোনাজাত পরিচালনা করতে বলেন। পরে মাওলানা মো. সাইফুল্লাহ তার ভুলের বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানিয়ে আবার মোনাজাত করেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ৪৯ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর।
মোজাফফর আহমদ ১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আর্জন করেন। তিনি বিভিন্ন কলেজে দীর্ঘদিন শিক্ষকতার পর ১৯৫২ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করেন। ১৯৫৪ সালে অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণভাবে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন