২০১৭ সালের আগে নিয়োগপ্রাপ্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের (এএজি) পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ বুধবার দুপুরে বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে লিগ্যাল এইডের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এই দুই শ্রেণির (ডিএজি ও এএজি) আইন কর্মকর্তার নতুন নিয়োগের জন্য পুরাতনদের পদত্যাগ করার গুঞ্জন রয়েছে, এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন নিয়োগ হোক আর পুরোনো, যারা আছে তারা থাকুক। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া নতুন করে দেওয়া হবে। তাই ২০১৭ সালের আগে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে।’
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তাদের পদত্যাগের বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি বিজ্ঞ অ্যার্টনি জেনারেলকে। তিনি নিশ্চয়ই পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তবে তা আমি জানি না। এখন পর্যন্ত কোনো পদত্যাগপত্রও আমার কাছে পৌঁছায়নি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আবার তাদের (ডিএজি ও এএজিদের) বলছি, পদত্যাগের বিয়য়টি আপনাদের মাধ্যমে তাদের সকলের কাছে পৌঁছে যাবে।’
এদিকে একজন আইন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত সোমবার দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেল হঠাৎ করেই সব (ডিএজি ও এএজি) আইন কর্মকর্তাকে একটি মিটিং করার জন্য ডেকে পাঠান। এমনকি যারা সেদিন বাড়িতে চলে যান তাদেরকেও জরুরি ভিত্তিতে মিটিংয়ে যোগদান করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। সবাই মিটিংয়ে যোগদান করতে আসলে অ্যাটর্নি জেনারেল ওই মিটিং স্থগিত করেন।
এরপর মিটিংয়ের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে দু-একজন আইন কর্মকর্তাকে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আইনমন্ত্রী ২০১৭ সালের আগের সব আইন কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করতে আহ্বান জানাতে বলেছেন। কিন্তু এই আহ্বান জানানোর দায়িত্ব অ্যাটর্নি জেনারেলের ওপর পড়ে না বিধায় পরবর্তীতে ওই মিটিং স্থগিত করেন। তিনি পদত্যাগের জন্য কাউকে আহ্বানও জানাননি।’
সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল, অতিরিক্ত অ্যটর্নি জেনারেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলরা। বর্তমানে একজন অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে দুজন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ৬৭ জন ডিএজি এবং ১০৭ জন এএজি কাজ করছেন।
‘ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার নাগরিকের মৌলিক অধিকার’ আনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী জানান, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার এবং আইনের শাসনের মূলনীতি। সরকার বিশ্বাস করে, সকল নাগরিকের ন্যায়বিচারে প্রবেশের সমান অধিকার এবং নিরপেক্ষ বিচার পাওয়ার অধিকার থাকা প্রয়োজন। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশ যেখানে বিচারপ্রার্থীদের একটি বড় অংশ আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে আছে তাদের জন্য আইনি পরামর্শ গ্রহণ এবং আইনি প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা কষ্টসাধ্য। তাই নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ জনগোষ্ঠীর আইনি অধিকার নিশ্চিতকল্পে সরকার ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করেছে। জেলা আইনগত সহায়তা প্রদান অফিসের মাধ্যমে দরিদ্র ও অসহায় ব্যাক্তিদের ন্যায় বিচারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে আইনগত সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন