বগুড়ার নন্দীগ্রাম পৌর শহরে জীবন্ত গাছ ও ডাল এবং মরা বাঁশের সঙ্গে ঝুলছে ৩০০ সড়কবাতি। এসব বাতি সাময়িক সুবিধা দিলেও তা মানুষের নিরাপত্তার প্রতি হুমকির সৃষ্টি করেছে। গাছের আশপাশে বৈদ্যুতিক তার ঝুলে আছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পৌরবাসী।
পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো ধরনের তথ্য নেই। তবে নন্দীগ্রাম পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের ১২০০টি সড়কবাতি আছে। এর মধ্যে ৩০০টি বাতিই ঝুলছে জীবন্ত গাছ ও ডাল এবং মরা বাঁশের খুঁটির সঙ্গে। তবে সড়কবাতির সংখ্যা আরো বাড়বে বলে পৌরবাসী জানান।
সরেজমিন দেখা যায়, পৌর শহরের বেলঘরিয়া সড়ক, মাঝগ্রাম, বাসস্ট্যান্ড এলাকা, কলেজপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ইউক্যালিপটাস, কড়ই ও মরা গাছের সঙ্গে বৈদ্যুতিক সড়কবাতি লাগানো হয়েছে। চিকন তার ও গুনা দিয়ে সঞ্চালন লাইন টেনে এসব সড়কবাতি লাগানো হয়েছে।
কলেজ শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন আমরা কলেজে যাতায়াত করি। এভাবে জীবন্ত গাছ ও মরা গাছের খুঁটিতে বিদ্যুৎ লাইন জুড়ে দেওয়ায় আমরা সামান্য বাতাস হলেই আশঙ্কায় থাকি কখন এসব ছিঁড়ে পড়ে।
সিএনজিচালক রাজু আহম্মেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যুতের লাইনগুলো এ অবস্থায় চলছে। কলেজপাড়ার আব্দুল মমিন বলেন, এটা তো বিদ্যুৎ লাইন না, মরণফাঁদ। কারণ যেকোনো সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে এসব গাছ ভেঙে যেতে পারে। তখন মানুষের মৃত্যু ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না।
পৌর শহরের একাধিক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন ধরে গাছের সঙ্গে এসব বৈদ্যুতিক সড়কবাতি লাগানো আছে। সামান্য ঝড়-বৃষ্টি হলেই এসব খুঁটির তার ছিঁড়ে পড়ে থাকে। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, জীবন্ত গাছের সঙ্গে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা বিদ্যুৎ-প্রবাহ আইন ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নীতিমালার পরিপন্থী। কারণ জীবন্ত গাছ এমনিতেই অতিমাত্রায় বিদ্যুৎ-পরিবাহী। আর বর্ষায় ভেজা গাছ আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নন্দীগ্রাম এরিয়া অফিসের এজিএম মাজাহারুল ইসলাম বলেন, মিটার লাগানো পর্যন্ত বিদ্যুৎ অফিসের দায়িত্ব। মিটারের পর থেকে যে লাইন টাঙিয়ে সড়কবাতি ঝুলানো হয়েছে এসব দায়িত্ব পৌরসভার। তাই গাছে সড়কবাতি লাগানোর বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই।
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ বলেন, সাবেক মেয়রের সময় থেকে জনগণের সুবিধার জন্য কিছু গাছে বাতি লাগিয়েছে। বর্তমানে এ সব সড়কবাতি জিআই পিলার বসিয়ে সংস্কার করা হচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন