স্ত্রীর নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) থেকে টাকা তুলে তা পরিশোধ না করে উল্টো তাকে তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আসমত আলী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
তালাক পাওয়া ওই নারী বর্তমানে আবারও স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়ার দাবিতে পাঁচ দিন ধরে সাবেক স্বামীর বাড়িতে অনশনে বসেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার ধুনট উপজেলায়।
অনশনে বসা ওই নারীর নাম হাসিনা খাতুন। তিনি অভিযোগ করেন, আসমত আলী ঋণের দায় তার ওপর চাপিয়ে তাকে তালাক দিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে এর কোনো প্রতিকার না পেয়ে তিনি এই অনশনের পথ বেছে নিয়েছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, প্রায় ২০ বছর আগে ধুনট উপজেলার উলিপুর গ্রামের মোকছেদ মণ্ডলের মেয়ে হাসিনা খাতুনের সঙ্গে মথুরাপুরা এলাকার আসমত আলীর বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। আসমত স্ত্রী হাসিনাকে দিয়ে কৌশলে বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ঋণ ওঠান। ঋণের টাকা তোলার কয়েক দিন পর থেকে আসমত অন্য নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি বুঝতে পেরে হাসিনা প্রতিবাদ করেন। ফলে হাসিনাকে প্রায়ই মারধর করতেন আসমত। এ বিষয়ে কয়েক দফা গ্রাম্য সালিস করেও কোনো সমাধান হয়নি।
এ অবস্থায় ঋণের টাকা পরিশোধ না করেই দুই মাস আগে হাসিনাকে তালাক দেন আসমত। তালাকের পর এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের দায় গিয়ে পড়ে হাসিনার ওপর। একপর্যায়ে ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় আসমতের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন হাসিনা। কিন্তু এতেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত শনিবার বিকেল থেকে ফের স্ত্রীর মর্যাদা পেতে আসমতের বাড়িতে অনশন শুরু করেন হাসিনা।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে হাসিনা খাতুন জানান, তার মাথার ওপর প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ঋণের বোঝা। এই টাকা পরিশোধ করা তার একার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না। এ কারণে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নিয়ে অনশন করছেন তিনি। স্ত্রীর মর্যাদা নিয়েই তিনি ফিরবেন।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে আসমত আলী জানান, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দুজন মিলে সংসারের কাজেই খরচ করেছেন। তিনি টাকা একা খরচ করেননি। তাই ঋণ শোধের বিষয়টি তার একার দায়িত্ব না। এসব ঘটনা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তাকে তালাক দিয়েছেন। তালাকের পর থেকে হাসিনার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেননি তিনি।
হাসিনা এখন তার বাড়িতে অবৈধভাবে অবস্থান নিয়েছেন বলে দাবি আসমতের।
এ বিষয়ে ধুনট থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল জব্বার বলেন, ‘হাসিনা খাতুন ঋণের টাকা পরিশোধের বিষয়ে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা ছিল। তবে মীমাংসা না হওয়ার বিষয়ে পরে তাকে জানানো হয়নি। স্বামীর বাড়িতে অনশনের বিষয়েও তার জানা নেই। নতুন করে অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন