রাজধানীতে কালবৈশাখীর ছোবলে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটের প্যান্ডেল ভেঙে পড়েছে। এতে একজন নিহত ও অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছেন। আর রাজধানীর বাড্ডায় দেয়াল ধ্বসে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ে পাবনায় রেলাইলের উপরে গাছ উপরে পড়ায় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। একই কারণে সৈয়দপুর থেকে ঢাকাগামী ইউএস বাংলা ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুটি বিমান চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করে। অপরদিকে ইফতারের আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী ও বগুড়ায় ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়ে অন্য ৬ জন।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম জানান, ইফতারের পর রাজধানীতে ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। সেই সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পরপর হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটের প্যান্ডেল ভেঙে শফিকুল ইসলাম (৩৫) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি টায়ার কারখানায় কাজ করতেন। তার বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায়। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে রাখা হয়েছে।
হাসপাতালে শফিকুলের শ্যালক সাইফুল ইসলাম জানান, মাগরিবের ফরজ নামাজ শেষ করে মাত্র সুন্নাত পড়তে দাঁড়িয়েছিল। ওই সময় হঠাৎ ঝড়ো-তুফান শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে প্যান্ডেলটি ভেঙে পড়ে। এতে শফিকুল গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ৮টার দিকে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক সূত্র জানায়, আহত অবস্থায় ঢামেকে ভর্তি হয়েছে ১৯জন মুসল্লী। এদের মধ্যে রয়েছেন হেলাল, মনির, শফিক, রহমান, মনিরুল, রুবেল, তারেক, আলামিন, সোহাগ, জানে আল, বিপ্লব, হেলাল। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি। আহতদের মধ্যে ২জন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (মসজিদ ও মার্কেট বিভাগ) মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার জানান, শুক্রবার দিন মসজিদে প্রচুর লোক হয়, এর মধ্যে রমজান মাস, তাই মসজিদের দক্ষিণ গেটে মুসল্লিদের নামাজের জন্য একটি প্যান্ডেল করা হয়। মাগরিবের নামাজের সময় প্রবল ঝড়ে প্যান্ডেলটি ভেঙে পড়ে যায়। তখন সেখানে ১০০ থেকে ১৫০ জনের মতো মুসল্লি ছিল। এর পর আমরা ১৪-১৫ জন মুসল্লিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এর মধ্যে ২-৩ জনের অবস্থা গুরুতর দেখেছি। সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ঝড়ো হাওয়ায় বাড্ডায় প্রাণ আর এফএল ভবনের সামনে দেয়ার ধ্বসে দুইজজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- অসীম পরিবহণের স্টাফ বুলবুল বিশ্বাস (২৭) ও পথচারী তপন (২৮)। তাদের লাশ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।
আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ঝড়ের সময় বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন সদর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত হজরত আলীর ছেলে রেজাউল হোসেন (৪০) ও মোতালেব হোসেনের ছেলে মো. মুসা (৩৫)। আহত হয়েছেন একই এলাকার হজরত আলী (৬০)। তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার বিকেলে জেলার পোরশা উপজেলায় বজ্রপাতে দুই ধানকাটা শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। এরা হলেন- উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের গানুইর গ্রামের আজাদ হোসেনের ছেলে শফিনুর রহমান বিষু (৩২) এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার পিঠাইল গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে হাসান আলী (৩০)।
বগুড়ার শহরতলীর শ্যামবাড়িয়া এলাকায় প্রচণ্ড ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে শহীদুল ইসলাম (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত শহীদুল শহরের সাবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় ট্রাকের হেলপার ছিলেন বলে জানা গেছে। এছাড়া রাজশাহীতে ঝড়-বৃষ্টির সময় গাছচাপায় সাবেক ইউপি সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন